গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ত্রিধারা-কাণ্ডে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ: শুধুমাত্র হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট এবং প্ল্যাকার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁদের স্লোগান ঘৃণার নয়। ধর্মীয় ভাবে কাউকে আঘাত করেননি। অনেক সাধারণ মানুষ ওই স্লোগান দিচ্ছেন। ধৃতদের প্রত্যেকেরই কম বয়স। বেশির ভাগের বয়স ২০-২৫ বছর। অতি উৎসাহে তারা ওই কাজ করে থাকতে পারেন। আরজি করকে কেন্দ্র করেই ওই স্লোগান।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের খবর জানতেই হাসি ফুটল ধর্মতলা চত্বরে আন্দোলন-অনশনে বসা জুনিয়র ডাক্তারদের মুখে। অর্ণব মুখোপাধ্যায়, স্নিগ্ধা হাজরারা অনশনমঞ্চে কেঁদেই ফেললেন। হাতিতালি শুরু হয়। ঘোষণা করা হয়, এই আন্দোলন যেন এ ভাবেই ছড়িয়ে পড়ে।
হাই কোর্ট ত্রিধারা-কাণ্ডে নির্দেশ দিয়েছে, আর কোনও পুজো মণ্ডপের ২০০ মিটারের মধ্যে প্রতিবাদ জানানো যাবে না। রাজ্য সরকারের কার্নিভালে ডিস্টার্ব করা যাবে না।
১ হাজার টাকা বন্ডে জামিন দিয়েছেন বিচারপতি সরকার। আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ বহাল থাকছে। তত দিন ধৃতদের প্রতি সপ্তাহে থানায় হাজিরা দিতে হবে। ধৃতেরা আর কোনও পুজো মণ্ডপে প্রতিবাদ জানাতে পারবেন না।
পুলিশ হেফাজতে রাখার প্রয়োজনীয়তা নেই। বলল কলকাতা হাই কোর্ট। ত্রিধারা-কাণ্ডে ধৃত ন’জনকে অন্তর্বর্তিকালীন জামিন দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
আইনজীবী জয়ন্ত: যে সব ধারা দেওয়া হয়েছে তা কি গ্রহণযোগ্য? আদালত তা বিবেচনা করুক। আইনের অপব্যবহার হলে এফআইআর খারিজ করা যায়।
‘‘অপরাধ কী? ওই প্রতিবাদ জানানো কি অপরাধ? পুলিশ কী ভাবে প্রতিবাদে হস্তক্ষেপ করে?’’ প্রশ্ন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের।
আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য: ওই ব্যক্তিদের হেফাজতে নিয়ে মামলা সাজাচ্ছে পুলিশ। (রাজ্য জানিয়েছে তারা বড়সড় চক্রান্তের ইঙ্গিত পেয়েছে)
রাজ্য: বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে দেওয়া হোক।
রাজ্য: প্রতিবাদকারীদের ফোন বাজেয়াপ্ত করে ফরেন্সিকে পাঠানোর প্রয়োজন রয়েছে। প্রতিবাদ করার অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু বড় জমায়েতে সমস্যা করে না।
রাজ্য: এই অবস্থায় হাই কোর্টের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।
রাজ্য: পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত করে গ্রেফতার করেছে। হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ থেকে জানা গিয়েছে বড় চক্রান্তের কথা। আরও তদন্তের জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাত দিনের হেফাজতে পাঠিয়েছেন।
রাজ্য: একে অপরের নাম ধরে ডাকছিলেন। বিচারপতি: এই বিট্টু (অভিযোগকারী) ত্রিধারার কেউ নন?
বিচারপতি: এই বিট্টুকুমার ঝা কে? (যাঁর এফআইআরের ভিত্তিতে ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়) রাজ্য: স্থানীয় মানুষ। বিচারপতি: ওই ব্যক্তি কী ভাবে সবার নাম জানলেন?
কোর্ট অফিসার জানান, এখনও পর্যন্ত আলিপুর আদালতের ‘অর্ডার কপি’ আপলোড হয়নি।
বিচারপতি: ওই মণ্ডপে কি প্রতিবাদ জানানো অপরাধ? রাজ্য: তা নয়। পূর্ব পরিকল্পনামাফিক ওখানে যাওয়া হয়েছে। হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ করেছে। শান্তি নষ্ট করার জন্য যাওয়া হয়েছে।
বিচারপতি: ধৃতদের বয়ান কোন অফিসার রেকর্ড করেছেন?
রাজ্যের আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত: তদন্তকারী অফিসার। থানার পুলিশ।
রাজ্য: আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ভাল জানবেন থানায় কেমন বন্দোবস্ত রয়েছে। তিনি কলকাতার মেয়র ছিলেন।
রাজ্য: লালাবাজারে সেন্ট্রাল লকআপ রয়েছে। থানায় এত জনকে রাখার ব্যবস্থা নেই।
বিচারপতি: কেন লালাবাজারে নিয়ে গেলেন? সবাইকে কি গ্রেফতার করে ওখানে নিয়ে যান?