বৃহস্পতিবার বইমেলায় প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ঘুরলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
তিনি বই লিখবেন। সেখানে থাকবে রাজ্যে ‘নিয়োগ দুর্নীতি’র প্রসঙ্গও। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বইমেলায় এসে এমনটাই জানালেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে যে ক’টি মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠেছে, তার পর্যবেক্ষণ এবং নির্দেশে তিনি যা বলেছেন, তাতে তোলপাড় গোটা রাজ্য। রাজ্য রাজনীতিও আবর্তিত তাঁর মন্তব্য, পর্যবেক্ষণ এবং রায়ে। সেই তিনিই এ বার জানালেন, বই লিখবেন। এবং সেখানে থাকবে এই ‘দুর্নীতি’ পর্বের উল্লেখ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বইমেলায় ঘুরতে দেখা যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। পরনে কালো কোট আর ট্রাউজার্স। তাঁকে ঘিরে রয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। নিরাপত্তার সেই ঘেরাটোপ পেরিয়ে তাঁর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন অনেকেই। কেউ কেউ নিজস্বী তুলতেও চেয়েছেন। পাঁচ নম্বর গেট দিয়ে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিট নাগাদ বইমেলায় প্রবেশ করেন বিচারপতি। সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী। তাঁকে দেখে একযোগে চিনতে পারেন বইপ্রেমীরা। এর পর তাঁকে ঘিরেই এগোতে থাকে ভিড়ের জটলা। কেউ তাঁকে হাতে ফুল তুলে দেন। কেউ বলেন, ‘‘একটা বার প্রণাম করতে চাই।’’ বিচারপতি কিন্তু এজলাসের মেজাজে ছিলেন না। তিনি মেলায় সকলের সঙ্গে হাত মেলান। তাঁদের কথা শোনেন। কথা বলেন। জটলা থেকে উড়ে আসা ‘আপনি তো ভগবান’ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ভগবান আমি নই। ভগবান কেউ নন। ভগবান হল সংবিধান।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ও কি বই লিখবেন? প্রশ্ন করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। জবাবে বিচারপতি বলেন, ‘‘নিশ্চয়ই লিখব। আত্মজীবনী লেখার ইচ্ছা রয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতির কথা অবশ্যই থাকবে। ওই নিয়ে একাধিক মামলা রয়েছে আমার। সেগুলোর কথা থাকবে।’’
একাধিক স্টলে ঢুকে বইও সংগ্রহ করেন বিচারপতি। কিনেছেন লেখার কালিও। বিচারপতি জানান, উপন্যাস পড়তে তিনি বেশি পছন্দ করেন। তাই অনেক উপন্যাস কিনেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই কি তিনি দেখবেন? আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই দেখব।’’ অতীত দিনের বইমেলার প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন বিচারপতি। তাঁর কথায়, ‘‘কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে আসতাম। অন্য রকম হত।’’
বৃহস্পতিবার ঘণ্টাদেড়েক ছিলেন বইমেলায় ছিলেন বিচারপতি। বেরোবার আগে তিনি বলেন, ‘‘বইমেলায় না এলে একটা উৎসব জীবন থেকে বাদ চলে যায়। আবার হয়তো আসতে পারি।’’