(বাঁ দিকে) বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। অভীক দে (ডান দিকে)। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
টালা থানার এসআইকে তলব করেছে সিবিআই। রবিবার সকালে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছেন তিনি। সেখানেই আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার তদন্ত চলছে। এই মামলাতেই শনিবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস এবং অভীক দে-কে। রবিবার সকালে আবার বিরূপাক্ষ সিজিওতে হাজিরা দিয়েছেন। সিবিআই সূত্রের খবর, রবিবার তলব করা হয়েছে অভীককেও। এ ছাড়া সৌরভ পাল নামের এক জুনিয়র ডাক্তারও সিবিআইয়ের নজরে রয়েছেন। তাঁকেও শনিবার জিজ্ঞাসাবাদের পর রবিবার তলব করা হয়েছে। তিনি হাজিরা দিয়েছেন সিজিওতে।
আরজি করের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তিনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হেফাজতেই রয়েছেন। ওই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে। বর্তমানে তিনিও কেন্দ্রীয় সংস্থার হেফাজতে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছে সিবিআই। এ বার ওই থানার এসআইকেও ডাকা হল। গত ৯ অগস্ট আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, ঘটনাপ্রবাহ কী ভাবে এগিয়েছে, সে সব বিষয়ে এসআইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। বয়ান মিলিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা।
শনিবার এই মামলায় বিরূপাক্ষ এবং অভীককে তলব করা হয়েছিল। গভীর রাত পর্যন্ত তাঁরা সিজিওতে ছিলেন। রাত দেড়টার পর সিজিও থেকে বেরিয়ে যান বিরূপাক্ষ এবং অভীক। তাঁরা দু’জনেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক হওয়া সত্ত্বেও ঘটনার দিন আরজি করে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মেডিক্যাল কলেজে ‘হুমকি সংস্কৃতি’ চালানো এবং ‘ভয়ের পরিবেশ তৈরি’র অভিযোগ রয়েছে। দু’জনেই সন্দীপের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। আরজি কর আবহে তাঁদের বিরুদ্ধে বৌবাজার থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়। বিরূপাক্ষকে প্রথমে কাকদ্বীপে বদলি করা হয়েছিল। পরে তাঁকে সাসপেন্ড করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
আরজি কর-কাণ্ডে প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। সকালে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর কেন এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল রাত পৌনে ১২টায়, আদালতেও সেই প্রশ্ন ওঠে। জুনিয়র ডাক্তারেরা কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করেন। আন্দোলনের চাপে বিনীত গোয়েলকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৪২ দিন পর কর্মবিরতি আংশিক তুলে নিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আরজি কর মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তদন্তের একটি রিপোর্ট ইতিমধ্যে শীর্ষ আদালতে জমাও দিয়েছে সিবিআই। যা দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি।