১৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। প্রতীকী ছবি।
রাতের অন্ধকারে উড়ালপুলের উপরে এক ব্যবসায়ীর গাড়ি দাঁড় করিয়ে ১৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। ধৃত দু’জনের নাম প্রবীণ প্রসাদ (৩৫) এবং মহম্মদ শাহজাহান (৩৩)। তাঁরা নিজেদের রাজ্য পুলিশের কর্মী বলে দাবি করেছেন। তাঁদের কাছ থেকে রাজ্য পুলিশের আইবি বিভাগের দু’টি পরিচয়পত্রও উদ্ধার হয়েছে। তবে সেগুলি আসল কি না, দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২৬ এপ্রিল ঘটনার সূত্রপাত। পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুল ধরে মোটরবাইকে চেপে বড়বাজারে ব্যবসার কাজে যাচ্ছিলেন ভবানীপুরের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী। মোটরবাইকে চড়েই উড়ালপুলের মাঝে ওই ব্যবসায়ীকে থামান দুই অভিযুক্ত। পুলিশের পরিচয় দিয়ে ভয় দেখিয়ে তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যান তাঁরা। এর পরে ভয় দেখিয়ে ওই ব্যবসায়ীর থেকে অভিযুক্তেরা প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ। এমনকি, এ কথা পুলিশকে জানালে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় বলে দাবি করেছেন ওই ব্যবসায়ী।
ঘটনার পরদিন শেক্সপিয়র সরণি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যবসায়ী। তদন্তের ভার নেয় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে শনিবার ভোরে লিলুয়া থেকে প্রবীণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শাহজাহানের নাম পান গোয়েন্দারা। বেলার দিকে তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়। ধৃত দু’জনকে শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে ৪ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
জানা গিয়েছে, প্রবীণ লিলুয়ার বাসিন্দা। শাহজাহান আলিপুরের গোপালনগরে থাকেন। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ঘটনার সময়ে দু’জনেই উপস্থিত ছিলেন। তল্লাশির নামে নিজেদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে ব্যবসায়ীর টাকা হাতান তাঁরাই। তবে ওই ব্যবসায়ীর কাছে যে টাকা আছে, এ খবর তাঁরা পেলেন কী ভাবে, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। এর আগেও কোনও অপরাধে ধৃতদের জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল কি না, সেটাও দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মাসকয়েক আগে ভবানীপুরে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢুকে সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে তল্লাশি চালিয়ে নগদ প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠেছিল। ট্যাংরা থানা এলাকাতেও অনেকটা একই রকম ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সেই দুই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুলের ঘটনা ফের পথের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাল।