সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস।
কলকাতা পুরভোট হবে ১৯ ডিসেম্বর। কোভিড বিধি মেনে হবে নির্বাচন। ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে জানাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
তবে ভোটের দিন ঘোষণা হলেও ফল কবে, তা স্পষ্ট করে জানায়নি কমিশন। সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস বলেন, ‘‘নির্বাচন প্রক্রিয়া ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। গণনা নিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আমরা তিন-চার দিনের মধ্যে জানিয়ে দেব।’’ পরে অবশ্য কমিশন জানায়, আপাতত গণনার জন্য ২১ ডিসেম্বর তারিখটিকেই সামনে রেখে এগোচ্ছে তারা।
কলকাতার পাশাপাশি ১৯শে ডিসেম্বর হাওড়া পুরসভারও ভোট হতে পারে বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু হাওড়া পুরসভার বিন্যাসের ব্যাপারে রাজ্যসরকার যে বিল এনেছিল, তাতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় সই না করায় হাওড়ার ভোটের দিন নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। বৃহস্পতিবার কমিশনের সাংবাদিক বৈঠকের আগে সকালে যখন কলকাতা পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল, সেখানেও হাওড়া পুরভোট নিয়ে কিছু বলা হয়নি। দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে কমিশনার জানান, ‘‘সাধারণত রাজ্য এবং কমিশন যৌথ ভাবেই নির্বাচনের তারিখ ঠিক করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাজ্য কিছু জানায়নি। রাজ্য সরকার জানালেই হাওড়া পুরভোটেরও দিন ঘোষণা করবে কমিশন।’’
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা নাগাদ কলকাতা পুরভোট নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে কমিশন। শুরুতেই কমিশনার জানান, কলকাতা পুরভোট নিয়ে এই প্রথম সাংবাদিক বৈঠক কমিশনের। ১৪৪টি ওয়ার্ডে ভোট হবে কলকাতায়। এর মধ্যে ৪ হাজার ৭৪২টি বুথ, ৩৮৫টি অতিরিক্ত বুথ। এ ছাড়া ১ হাজার ৭০৭টি প্রেমিসেস থাকবে। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত হবে ভোটগ্রহণ।’’
কলকাতায় মোট ৪০ লক্ষ ৪৮ হাজার ৩৫২ জন ভোটার। কমিশনার জানিয়েছেন, কোভিডবিধি মেনেই হবে ভোটগ্রহণ। উপনির্বাচনে যে কোভিডবিধি জারি ছিল, পুরভোটেও একই নিয়ম বজায় থাকবে। সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে কোনও রকম সভা বা পদযাত্রা করা যাবে না। বদলে ভোটের প্রচারে রাজনৈতিক দলগুলিকে ছোট মিটিং করার ব্যাপারে জোর দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া করোনাবিধির কথা মাথায় রেখেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটের প্রচারের কাজে প্রার্থী-সহ ৫ জনের বেশি যেতে পারবে না বলেও জানিয়েছে কমিশন।
বৃহস্পতিবার এই বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধি জারি হয়ে গিয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, প্রার্থীরা মনোনয়নও জমা দিতে পারবেন বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২৫ নভেম্বর থেকেই। ১ ডিসেম্বর মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। তারপর ২ ডিসেম্বর স্ক্রুটিনি করা হবে বলে জানান কমিশনার সৌরভ। প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে চাইলে, তা করতে হবে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে। তবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত। রবিবার এবং অন্য সরকারি ছুটির দিন মনোনয়ন জমা নেওয়া হবে না। এ ছাড়া ১৯ ডিসেম্বর ভোটের পর যদি কোনও কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের প্রয়োজন হয়, তবে তা করতে হবে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে।
নিরাপত্তা প্রসঙ্গে সৌরভ বলেন, ‘‘আমরা ডিজি এবং মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছি। নিরাপত্তাবাহিনী কী হিসেবে মোতায়েন করা হবে, তার একটা হিসেব চেয়েছি। প্রত্যেকটি প্রেমিসেস এবং প্রত্যেকটি বুথে কত জন করে নিরাপত্তাকর্মী বা কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে, তা ডিজি জানালে, তার ভিত্তিতেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’’