জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ছবি: পিটিআই।
এসএসকেএম হাসপাতালে আইসিইউতে রাখা হয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। তাঁর রক্তচাপে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেই কারণে সোমবার রাতেই তাঁকে আইসিইউতে পাঠানো হয়। মন্ত্রীকে পর্যবেক্ষণে রেখেছে হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড।
রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে ইডির হাতে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুকে প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তিনি অসুস্থ বোধ করায় গত মঙ্গলবার রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
মন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে হাসপাতালে। স্নায়ু, হৃদ্রোগ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ছাড়াও তাতে রয়েছেন কিডনি বিশেষজ্ঞ এবং ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ।
জ্যোতিপ্রিয় বরাবরই সুগারের রোগী। গ্রেফতারির শুরু থেকেই তাঁর নানা রকম শারীরিক অসুস্থতা ছিল। ইডি তাঁকে গ্রেফতার করার পর আদালতে মন্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। বেশ কিছু দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর তাঁকে হেফাজতে পায় ইডি।
১৪ দিন ইডি হেফাজতে থাকার পর প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হয়েছিল জ্যোতিপ্রিয়কে। তার আগে ইডি হেফাজতে থাকাকালীনই স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সামনে তিনি একাধিক বার নিজের অসুস্থতার কথা বলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, তাঁর শরীরের বাঁ দিকের অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। সে দিক তিনি নড়াচড়া করাতে পারছেন না। মন্ত্রীর চোখেমুখেও দুর্বলতার ছাপ ছিল স্পষ্ট।
বালুর গ্রেফতারির পর তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, বালু মারা যেতে পারেন। তা যদি হয়, তবে বিজেপি এবং ইডির বিরুদ্ধে মামলা করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন মমতা।
গত ১৬ নভেম্বর নিম্ন আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল জ্যোতিপ্রিয়ের। অসুস্থতার কারণে তাঁকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির করানো হয়েছিল। সে দিন তিনি বিচারককে নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ‘‘বাঁচতে দিন।’’ তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর ৩৫০-এর বেশি সুগার। হাত-পা কাজ করছে না। বালুর কথা শোনার পর বিচারক পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘‘আপনার অসুবিধা হলে সেলে চলে যেতে পারেন।’’ এই শুনানির পরের দিনই প্রেসিডেন্সি জেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন জ্যোতিপ্রিয়। কাশি, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
জ্যোতিপ্রিয় আইসিইউতে রয়েছেন শুনে মঙ্গলবার বেলায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে আসেন মন্ত্রীর দাদা দেবপ্রিয় মল্লিক। কিন্তু তাঁকে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসকেরা জানান, হাসপাতাল সুপারের অনুমতি ছাড়া দেখা করতে দেওয়া সম্ভব নয়।