R G Kar Hospital Incident

ডাক্তারদের পাশে কংগ্রেস, বাম জমায়েতে জটিলতা

আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-ছাত্রীর খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সব দোষীর শাস্তি এবং দ্রুত বিচারের দাবিতে বুধবার থেকে দু’দিনের অবস্থান শুরু করেছে কংগ্রেস।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:০৪
আর জি কর কান্ডে বিচারের দাবিতে ধর্মতলায় দু’দিনের অবস্থান বিক্ষোভ কংগ্রেসের। বুধবার মঞ্চে ছিলেন অধীর চৌধুরী ও প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন সভাপতি শুভঙ্কর সরকার।  ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

আর জি কর কান্ডে বিচারের দাবিতে ধর্মতলায় দু’দিনের অবস্থান বিক্ষোভ কংগ্রেসের। বুধবার মঞ্চে ছিলেন অধীর চৌধুরী ও প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

লোক খেপিয়ে জুনিয়র ডাক্তারেরা আন্দোলনের নামে ‘নাটক’ করেছেন বলে আক্রমণ করেছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিজেপির নেতা-বিধায়কদের আরও কেউ কেউ চিকিৎসকদের আন্দোলনকে তোপ দেগেছেন। এই পরিস্থিতিতে জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশেই দাঁড়াল প্রদেশ কংগ্রেস। আর জি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে ধর্মতলায় দলের ধর্না-অবস্থান থেকে কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল বেআব্রু করে দিয়েছে। যা রাজনৈতিক দলের আন্দোলন থেকে আসেনি।

Advertisement

আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-ছাত্রীর খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সব দোষীর শাস্তি এবং দ্রুত বিচারের দাবিতে বুধবার থেকে দু’দিনের অবস্থান শুরু করেছে কংগ্রেস। কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে বেলা ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রথম দিনের ধর্না চলেছে বৃষ্টির মধ্যেই। কংগ্রেসের ওই ধর্না-অবস্থান চলার কথা আজ, বৃহস্পতিবারও। আবার আর জি কর-কাণ্ডে ন্যায়-বিচারের দাবিতে আজই ‘কলকাতা দখলে’র ডাক দিয়েছে সিপিএমের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠন। হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে মিছিল আসার কথা ধর্মতলায়, তার পরে সেখানে জমায়েত। কংগ্রেসের ধর্না চলাকালীন সিপিএমের এই জমায়েত কোথায়, কী ভাবে হবে, তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। কলকাতা জেলা সিপিএমের সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের বার্তা বিনিময়ে প্রাথমিক ভাবে কোনও রফা-সূত্র বেরোয়নি বলেই খবর। সে ক্ষেত্রে পাশাপাশি দু’দলের অবস্থান চলবে একই বিষয়ে।

ধর্মতলায় অবস্থানের প্রথম দিনে অবশ্য কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী বা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার মঞ্চে বক্তৃতা করেননি। প্রশ্নের জবাবে শুভঙ্কর বলেছেন, ‘‘সাম্প্রতিক কালে দুর্নীতির অভিযোগে মন্ত্রীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত বা মন্ত্রীর সঙ্গীর বাড়ি থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধার হতে দেখেছেন রাজ্যের মানুষ। কিন্তু তার পরেও নির্বাচনে সেই দলই সাফল্য পেয়েছে। আর জি করের অমানবিক ঘটনার পরে জুনিয়র চিকিৎসকেরা আন্দোলনে নামতেই অজস্র সাধারণ মানুষ রাস্তায় প্রতিবাদে বেরিয়ে এসেছেন। রাজ্যে সিনিয়র বহু চিকিৎসক তো আগেও ছিলেন। জাল ওষুধে মানুষের জীবনকে কী ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে ফেলে দেওয়া হয়েছে, জুনিয়র চিকিৎসকদের এই আন্দোলনই সেই ব্যাপারে চোখ খুলে দিয়েছে।’’ প্রদেশ সভাপতির সংযোজন, ‘‘এর পরেও কি মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী দায় এড়াতে পারেন? এর পরেও সেই রাজ্য সরকার বা শাসক দলকেই সমর্থন করবেন কি না, মানুষকে ভাবতে হবে।’’ অধীর ফের দাবি করেছেন, আর জি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি— এই দুই বিষয়ের তদন্ত চলাকালীন ‘নৈতিক কারণে’ মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত।

অবস্থান-মঞ্চ ও তার চারপাশের ছবিতে এ দিন স্পষ্ট ছিল, কংগ্রেসের এই ধর্না কর্মসূচি মূলত অধীর-কেন্দ্রিক। তিনি প্রদেশ সভাপতি থাকাকালীনই এই কর্মসূচি ঠিক হয়েছিল, যার আয়োজন করছে মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী, মহম্মদ মুক্তার, সৌম্য আইচ রায়, সুমন রায়চৌধুরী, মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেস সভাপতি সুমন পাল, উত্তর ২৪ পরগনার তাপস মজুমদার, হাওড়ার পলাশ ভাণ্ডারী প্রমুখ হাজির ছিলেন প্রথম দিনের অবস্থানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement