(বাঁ দিকে) মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। জুনিয়র ডাক্তারদের পাঠানো মেলের কপি (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে যে প্রতিশ্রুতিগুলি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি পালন করা হচ্ছে না। এমন অভিযোগ জানিয়ে মনোজ পন্থকে ইমেল করলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মেলে তাঁরা মোট সাত দফা দাবির কথা জানিয়েছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এখনও পূরণ না হওয়া ওই দাবিগুলির কথা প্রশাসনকে স্মরণ করিয়ে দিতেই তাঁরা মুখ্যসচিবকে মেল করার সিদ্ধান্ত নেন। নবান্নের জবাবি মেলের অপেক্ষা করছেন তাঁরা।
আরজি কর-কাণ্ডের বিচার এবং হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ দাবি করে আন্দোলনে বসা জুনিয়র ডাক্তারেরা যে সাতটি দাবির কথা জানিয়েছেন সেগুলি হল—
১
সরকারি হাসপাতালে ‘থ্রেট কালচার’ বা হুমকির সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় স্তরে অনুসন্ধান কমিটি গঠন।
২
প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারির স্নাতক পড়ুয়া এবং আবাসিক ডাক্তারদের নিয়ে অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান কমিটি গঠন।
৩
মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ছাত্র প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের আয়োজন করা। আর তার জন্য দ্রত কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক ডাকার জন্য মেডিক্যাল কলেজগুলিকে নির্দেশ দেওয়া।
৪
ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের যে সকল সদস্যের বিরুদ্ধে থ্রেট কালচারকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে রাজ্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন। এবং এই কমিটি গঠনের কাজ আগামী সাতটি কর্মদিবসের মধ্যে করা।
৫
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার, নার্সিং এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে টাস্ক ফোর্স কিংবা নজরদারি কমিটি গঠন।
৬
কলেজ কাউন্সিল, অভ্যন্তরীণ কমিটি, রোগী কল্যাণ সমিতি, র্যাগিং প্রতিরোধ কমিটিকে পরবর্তী সাতটি কর্মদিবসের মধ্যে সক্রিয় করে তোলা। একই সঙ্গে এই কমিটিগুলিতে জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার, নার্স এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিনিধিত্ব রাখা।
৭
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভিস রুল’ অনুযায়ী চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য স্বচ্ছ এবং যথাযথ বদলি নীতি কার্যকর করা।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হলেই উদ্ধার হয়েছিল চিকিৎসক-পড়ুয়ার দেহ। প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ৪২ দিনের অবস্থানের পর গত শনিবার থেকে জরুরি পরিষেবা দেওয়া চালু করেছেন তাঁরা। কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে বৈঠকের পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর নবান্নে মুখ্যসচিব পন্থের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক হয়। বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের নিরাপত্তা বিষয়ক একাধিক দাবিদাওয়ার কথা প্রশাসনকে জানাতে রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়ে মেল করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
ওই বৈঠকে ১৫টি বিষয়ে দু’পক্ষ সহমত হয়েছে বলে জুনিয়র ডাক্তারদের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছিল। নির্যাসের একটি খসড়া লিখিত আকারে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পাঠান জুনিয়র ডাক্তারেরা।