(বাঁ দিক থেকে) ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক। —ফাইল ছবি।
বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস) ঘিরে সাজ সাজ রব রাজ্য প্রশাসনে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তড়িঘড়ি আবারও মন্ত্রিসভার বৈঠকের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিয়েছে নবান্ন। আগামী মঙ্গলবার বিকেলে নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধ্যায় সেই বার্তা পৌঁছে গিয়েছে রাজ্যের সব দফতরের মন্ত্রীর কাছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ৫-৬ তারিখে রাজ্যে বসছে শিল্প সম্মেলনের আসর। সেই সম্মেলনে যোগ দিতে আসতে পারেন দেশের তাবড় সব শিল্পপতি এবং বণিকমহলের প্রতিনিধিরা। নবান্ন সূত্রে খবর, বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে যোগদান করতে পারেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এবং ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক।
আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই শিল্প সম্মেলন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই মনে করা হচ্ছে, এ বারের শিল্প সম্মেলনে বিনিয়োগ টানতে বেশ কিছু ঘোষণা করতে পারেন মমতা। তাই শিল্প সম্মেলনের আগের দিন বিকেলে আবারও মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে বেশ কিছু নীতিগত সিদ্ধান্তে সরকারি অনুমোদন দিতে পারেন তিনি। তাই সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ হওয়ার পরেই ফেব্রুয়ারির ৪ তারিখের মন্ত্রিসভার বৈঠকের কাজ শুরু করে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আমলারা। নবান্নের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শিল্প সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও ছাড়পত্রের প্রয়োজনের কারণেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।
কারণ, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট পেশ করবেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। প্রথা অনুযায়ী, ওই দিন বাজেট পেশ করার আগে রাজ্য মন্ত্রিসভা সেই বাজেটে অনুমোদন দেবে। ফলে সে দিন দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে, তা স্থির ছিল। কিন্তু শিল্প সম্মেলনের জন্য বেশ কিছু ঘোষণার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক রীতি মেনে চলা জরুরি হয়ে পড়েছে, তাই মমতা আবারও মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন।
অন্য দিকে, বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে হেমন্তকে ডাকার অন্তরালে মমতার রাজনৈতিক চাল দেখছেন নবান্নের আমলাদের একাংশ। যে হেতু হেমন্ত এমন একজন মুখ্যমন্ত্রী, যিনি সদ্য বিজেপিকে হারিয়েছেন, সেই জয়ের স্বীকৃতি হিসাবেই ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে এই শিল্প সম্মেলনের মঞ্চে হাজির করাতে চান মমতা। এ ছাড়া ভুটানের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের যোগাযোগ রয়েছে। তা বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক বণিকমহলকে এ বিষয়ে ইতিবাচক বার্তা দিতেই তিনি ভুটান রাজাকে বিজিবিএসের মঞ্চে আসার আমন্ত্রণ পাঠিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। রাজাও মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে শিল্প সম্মেলনে যোগদানের বার্তা পাঠিয়েছেন নবান্নে।