Soumitra Khan

Jangalmahal: আলাদা জঙ্গলমহল রাজ্য চাই, সাংসদ সৌমিত্রর দাবিতে বার্লা-অস্বস্তি বাড়ল বিজেপি-র

ব্রিটিশ আমলের ভাগ তুলে ধরেই আলাদা জঙ্গলমহল চাইছেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তবে মূলত রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করতেই তাঁর এই বক্তব্য।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২১ ১৯:১৩
বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।

বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। —ফাইল চিত্র।

পৃথক জঙ্গলমহল রাজ্য গঠিত হোক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করতে গিয়ে এমনই দাবি তুলেছেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে নানা যুক্তিও দিয়েছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ। কিন্তু তিনি যা বলেছেন তাতেও রীতিমতো অস্বস্তিতে বিজেপি। সদ্যই আলাদা উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি তুলেছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। তা নিয়ে বিতর্ক চলার মধ্যেই নতুন প্রশ্নের জন্ম দিলেন সৌমিত্র। আর তাতে রাজ্য বিজেপি-র এক নেতার বক্তব্য, ‘‘একা বার্লায় রক্ষা নেই, সৌমিত্র দোসর। ব্যক্তিগত মতামত দিয়ে দলকে অস্বস্তিতে ফেলাটা যেন অসুখ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

সৌমিত্র অবশ্য নিজেই বলছেন, ‘‘আমার দাবিটা দলের নয়। আমি যে আলাদা রাজ্য চাইছি তেমনটাও নয়। আমার বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী বাংলার কথা বলেন। তৃণমূলও তাই বলে। কিন্তু বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ ধারণায় বিশ্বাসী।’’ তবে তিনি কেন আলাদা রাজ্যের দাবি তুলছেন? জবাবে সৌমিত্র বলেন, ‘‘অন্য রাজ্যের নেতাদের মুখ্যমন্ত্রী বহিরাগত বলেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমনকি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদেরও বহিরাগত বলেন। এর পরে কবে জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদেরও বহিরাগত বলবেন। সেই সুবিধা করে দিতেই আমাদের আলাদা রাজ্য করে দিন উনি।’’

Advertisement

এই জঙ্গলমহল রাজ্যের দাবির সঙ্গে ইতিহাসেরও উল্লেখ করেছেন সৌমিত্র। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বৃটিশ আমলে জঙ্গলমহল আলাদা জেলা ছিল। ১৮০৫ সালে ওই জেলা তৈরি হয়েছিল যার মধ্যে এখনকার বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর ও হুগলি জেলার কিছুটা অংশ ছিল। ১৮৩৩ সালে আবার সেটা ভেঙে বর্ধমান ও মানভূম জেলা তৈরি হয়।’’ সৌমিত্রর আরও দাবি, ‘‘বর্তমান সরকার তো বটেই, চিরকাল জঙ্গলমহলের মানুষেরা বঞ্চিত হয়েছেন। এখন তো কলকাতা সংলগ্ন এলাকার বিধায়কদের নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা। তাঁরাই গোটা রাজ্য চালান। সেই কারণেই আলাদা জঙ্গলমহল রাজ্য দরকার।’’

দিন কয়েক আগে আলাদা উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি করে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ বলেছেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের মানুষ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের কারণে চা বলয়ের বাসিন্দারা নিজেদের এলাকায় কাজ পাচ্ছেন না। তাঁদের ভিন্‌ রাজ্যে কাজের সন্ধানে যেতে হচ্ছে।’’ তিনি এ নিয়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন। যদিও পরে এই দাবিকে দল সমর্থন করে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন দিলীপ। তবে সৌমিত্র সমর্থন করেছেন বার্লাকে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘উত্তরবঙ্গ যে ভাবে বঞ্চিত তাতে এমন দাবি ওঠাটা তো ভুল কিছু নয়।’’

সৌমিত্র মানতে না চাইলেও দল যে অস্বস্তিতে তা স্বীকার করছেন রাজ্য বিজেপি-র নেতারা। এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘‘সৌমিত্র কখনও ত্রিশূল বিলি করেছেন। কখনও স্কুটি বিলির ঘোষণা করেছেন নিজের মনের থেকে। সম্প্রতি মুকুল রায় দল ছাড়ায় ন্যাড়া হওয়ার কথাও ঘোষণা করেছিলেন। এটা নতুন কিছু নয়। জঙ্গলমহলে বিজেপি শক্তিশালী। হয়তো আলাদা রাজ্য হলে নিজেকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিদার ভাবছেন নিজেকে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement