Flood Situation in West Bengal

পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেই ছাড়া হয় জল, মমতার চিঠির পাল্টা জানাল জল শক্তি মন্ত্রক

দক্ষিণবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ডিভিসি-কে দোষারোপ করেছেন। ডিভিসি-র জলাধার থেকে জল ছেড়ে পরিকল্পিত ভাবে বাংলায় ‘ম্যান মেড বন্যা’ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:৩৪
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠির পাল্টা চিঠি দিল জল শক্তি মন্ত্রক।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠির পাল্টা চিঠি দিল জল শক্তি মন্ত্রক। ছবি: পিটিআই।

রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির কথা বিশদে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি)-এর বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ করে তিনি লিখেছিলেন, অপরিকল্পিত ভাবে জল ছাড়া হয়েছে। সেই চিঠির পাল্টা দিল জল শক্তি মন্ত্রক। চিঠিতে জল শক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিল জানিয়েছেন, দামোদর ভ্যালি জলাধার নিয়ন্ত্রণ কমিটি (ডিভিআরআরসি)-র মাধ্যমে মাইথন এবং পাঞ্চেত বাঁধ পরিচালিত হয়। এই কমিটিতে ডিভিসি, জল কমিশন, পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। এই কমিটিই জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

Advertisement

পাতিল তাঁর চিঠিতে জানিয়েছেন, ১৪ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পশ্চিমবঙ্গের আধিকারিকদের অনুরোধে মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ ৫০ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছিল। কিন্তু ১৬ এবং ১৭ সেপ্টেম্বর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতির অবনতি হয়। পাতিল লিখেছেন, “বাঁধ বিপর্যয়ের ফলে দক্ষিণবঙ্গকে সম্ভাব্য বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে বাঁধ দু’টি থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বৃদ্ধি করা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না।” ডিভিসি-র বাঁধে ৪ লক্ষ ২৩ হাজার কিউসেকের বেশি জল জমলেও মাত্র আড়াই লক্ষ কিউসেকের মতো জল ছাড়া হয়েছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ডিভিআরআরসি দক্ষিণবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি মাত্রাছাড়া যাতে না হয়ে যায় তার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। একই সঙ্গে প্রতিটি পর্যায়ে রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে প্রতিটি পদক্ষেপ করেছে।

জল শক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিলের লেখা চিঠি।

জল শক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিলের লেখা চিঠি।

মমতা জানিয়েছেন, আরও বেশি বন্যার জল ধরে রাখার জন্য মাইথন, পাঞ্চেতের মতো জলাধারগুলির সংস্কার প্রয়োজন। এই দুই জলাধারের ধারণক্ষমতা ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে দিন দিন। মুখ্যমন্ত্রীর জলাধারগুলির ধারণক্ষমতা নিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেই বিষয়ে পাতিল লিখেছেন, ডিভিসি এই অঞ্চলের পলির প্রবাহ পরিচালনা করার জন্য কাজ করছে। পাতিল আরও জানিয়েছেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল অনুমোদন এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারে দ্বারা প্রস্তাবিত বিষয়গুলির উপর কাজ শুরু হয়েছে। জল শক্তি মন্ত্রকের তরফ থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন মন্ত্রী।

দক্ষিণবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ডিভিসি-কে দোষারোপ করেছেন। ডিভিসি-র জলাধার থেকে জল ছেড়ে পরিকল্পিত ভাবে বাংলায় ‘ম্যান মেড বন্যা’ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। আগামী দিনে ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement