এসটিএফের সূচনা পর্বে সেখানে যত পুলিশকর্মী থাকবে বলে জানানো হয়েছিল, এখন তা নেই। প্রতীকী ছবি।
নামেই প্রকাশ, তারা ‘বিশেষ’। বিশেষ বাহিনী। রাজ্য পুলিশের সেই এসটিএফ বা স্পেশাল টাস্ক ফোর্স জন্মের মাত্র তিন বছরের মধ্যেই গুরুত্ব হারাতে বসেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ও সংশয় জোরালো হয়েছে পুলিশ শিবিরেই। কারণ, তিন বছরে বদলি এসটিএফের চার জন শীর্ষ কর্তাকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে! এক জন কর্তা দায়দায়িত্ব বুঝে নিয়ে থিতু হয়ে বসতে না-বসতেই হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বদলির নির্দেশ। যেমন, গত মঙ্গলবারেই এসটিএফের এডিজি-র বদলির নির্দেশ জারি করেছে নবান্ন।
জঙ্গি দৌরাত্ম্য থেকে মাদক, বিস্ফোরক ও বেআইনি অস্ত্র কারবারের রমরমা রুখতে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ গড়া হয়েছিল ২০২০ সালে। সেখানে তৈরি করা হয় চারটি বিভাগ। জঙ্গি দমনে সিদ্ধহস্ত বিভাগের নাম ‘অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড’ বা এটিএস। দ্বিতীয়টি এফআইসিএন (ফেক ইন্ডিয়ান কারেন্সি নোট) সেল, যাদের মূল কাজ জাল নোট ধরা। মাদক পাচার রোধে আলাদা করে গড়া হয় নার্কোটিক্স বিভাগ। চতুর্থ বিভাগটি বিস্ফোরক ও বেআইনি অস্ত্র কারবার রোখার কাজে নিযুক্ত। ঠিক হয়, চারটি বিভাগের মাথায় থাকবেন চার পুলিশ সুপার বা এসপি। যদিও বর্তমানে আছেন মাত্র এক জন। এসপি-দের কাজ অতিরিক্ত পুলিশ সুপারেরা সামলাচ্ছেন বলে এসটিএফ সূত্রের খবর। অভিযোগ, সব বিভাগেই দক্ষ কর্মীর অভাব।
পুলিশ মহলের খবর, এসটিএফ একেই তো পরিকাঠামোর দিক থেকে পিছিয়ে। তার উপরে বারে বারে শীর্ষ পদে বদলির ফলে থমকে যাচ্ছে ওই বিশেষ বাহিনীর কাজ।পুলিশের দাবি, শীর্ষ কর্তাদের মনোভাবের প্রতিফলন পড়ে কাজকর্মের উপরে। এক-এক জন শীর্ষ কর্তার কাজের ধরন এক-এক রকম। তার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে কাজ শুরু করার কয়েক মাস পরে আবার নতুন কর্তার কাজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে পুরো বাহিনী। তাতে ব্যাহত হচ্ছে কাজ।
রাজ্য পুলিশের একাংশের অভিযোগ, এসটিএফের সূচনা পর্বে সেখানে যত পুলিশকর্মী থাকবে বলে জানানো হয়েছিল, এখন তা নেই। পরিকাঠামোর দিক থেকে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের থেকে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। রাজ্য এক পুলিশকর্তা জানান, কলকাতায় এসটিএফের সদর দফতর এবং শিলিগুড়িতে জ়োনাল দফতর থাকায় ওই দু’জায়গায় থানা এবং বিশেষ আদালত তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রস্তাব পাঠানোর এক বছর পরেও তা কার্যকর হয়নি।