WB Municipal Election

Municipal Elections 2022 Results: ১০৮ পুরভোটে কংগ্রেস, বাম এবং বিজেপি-কে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে নির্দল প্রার্থীরা

তবে পুরভোটে প্রাপ্ত ভোট শতাংশের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বামেরা। তারা পেয়েছে ১৩.৫৭ শতাংশ। বিজেপি পেয়েছে ১৩.৪২ শতাংশ।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২২ ১৯:১৭
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

রাজ্যের ১০৮ পুরনির্বাচনে মোট ওয়ার্ড জয়ের নিরিখে বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি-কে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেন নির্দল প্রার্থীরা। পরিসংখ্যান বলছে, বাম এবং কংগ্রেসের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি ওয়ার্ডে জিতেছে ‘অন্যান্যরা’ অর্থাৎ, নির্দল এবং কিছু ছোট দলের প্রার্থীরা। বিজেপি-র তুলনায় সেই সংখ্যাটা প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি। অন্য দিকে, ভোট শতাংশের বিচারেও কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দিয়েছে অন্যান্য।

বুধবার রাজ্যের ১০৮ পুরসভায় ভোটের ফল প্রকাশ হয়েছে। ২২৭৪ ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল জিতেছে ১৯৭৬ ওয়ার্ডে। বিজেপি জিতেছে ৬৩, বামেরা ৫৬ এবং কংগ্রেস ৫৯ ওয়ার্ডে। অন্য দিকে, মোট ১১৯ ওয়ার্ডে জিতেছেন নির্দল প্রার্থীরা। শতাংশের নিরিখে ৫.২৩ শতাংশ। অন্য দিকে, বিজেপি দাঁড়িয়ে ২.৭৭ শতাংশে, কংগ্রেস ২.৫৯ শতাংশে এবং বামেরা ২.৪৬ শতাংশে।

Advertisement

বিরোধীদের কার্যত পর্যুদস্ত করে এই পুরভোটে নিরঙ্কুশ আধিপত্য দেখিয়েছে শাসকদল তৃণমূল। এর আগে কলকাতা পুরসভা এবং সদ্য শেষ হওয়া চার পুরনিগমের ভোটেও সেই ছবিই দেখা গিয়েছে। তখন থেকেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত, বিরোধী শক্তি বাছাইয়ের প্রশ্নে ওই দুই নির্বাচনে সাধারণ মানুষকে বেশ দ্বিধাগ্রস্ত দেখিয়েছে। রাজ্যের ১০৮ পুরভোটে ওয়ার্ড দখলের নিরিখে বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি-কে পিছনে ফেলে নির্দলীয়দের এগিয়ে থাকায় সেই প্রবণতাই আরও এক বার প্রকট হল।

যদিও এই পুরভোটে প্রাপ্ত ভোট শতাংশের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বামেরা। তারা পেয়েছে ১৩.৫৭ শতাংশ। বিজেপি পেয়েছে ১৩.৪২ শতাংশ আর কংগ্রেস ৫.০৬ শতাংশ। অন্যান্যদের মোট প্রাপ্ত ভোট ৫.৫১ শতাংশ।

বেশ কিছু ওয়ার্ডে শাসকদলের প্রার্থীদের কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছেন নির্দল প্রার্থীরা। কোথাও কোথাও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের শেষ জয়ও ছিনিয়ে এনেছেন তাঁরা। যেমন, কোচবিহারের ২ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী তথা নিজের মা মীনা তারকে হারিয়ে জিতেছেন নির্দল প্রার্থী তথা ছেলে উজ্জ্বল তার। ফলপ্রকাশের পর তিনি বলেন, ‘‘এটা পারিবারিক নয়, রাজনৈতিক লড়াই। আমায় মানুষ চেয়েছিলেন, তাই জিতেছি।’’

পাশাপাশিই, রাজ্যের একাধিক পুরসভায় তৃণমূলের বিজয়রথের পথে এই নির্দল প্রার্থীরাই কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। হুগলির চাঁপদানি পুরসভায় ২২ ওয়ার্ডের মধ্যে ১১ ওয়ার্ডে জিতেছেন নির্দল প্রার্থীরা। তৃণমূল জিতেছে ১১ আসনে। যার জেরে ত্রিশঙ্কু হয়ে গিয়েছে ওই পুরসভায়। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা পুরসভাতেও কোনও দল একক ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এই পুরসভায় তৃণমূল সাত আসনে জিতেছে। বিজেপি জিতেছে তিন আসনে। নির্দল প্রার্থীরা জিতেছেন চার আসনে।

পুরভোটে জয়ী নির্দল প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। হুগলিতেই এ রকম ২০ জন নির্দল প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। ফল ঘোষণার পর তাঁরা নিজেদের তৃণমূলকর্মী এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে বিশ্বাসী বলেই দাবি করতে শুরু করেছেন। দলের নির্দেশ অমান্য করে পুরভোটে নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়ে যাঁরা জিতেছেন, তাঁদের যাতে আর দলে না ফেরানো হয়, ভোটের ফল বেরোনোর পর ওই দাবিতে হুগলির বৈদ্যবাটি-সহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। যদিও ভোটের আগেই বহু গোঁজ প্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তাঁদের আর দলে ফেরানো হবে না।

আরও পড়ুন
Advertisement