Howrah Municipal Corporation

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় প্রোমোটিং সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআরের সিদ্ধান্ত হাওড়া পুরসভার

ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনার পর রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কথা বলেন পুর প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তীর সঙ্গে। তার পরেই হাওড়া পুরসভার তরফে প্রোমোটিং সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৪ ১৫:৩১
Howrah Municipal corporation decides to lodge FIR against the promoter in the case of death of student due to electrocution

—প্রতীকী ছবি।

হাওড়ায় ছাত্রীমৃত্যুর ঘটনায় শেষ পর্যন্ত প্রোমোটিং সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর করার সিদ্ধান্ত নিল হাওড়া পুরসভা। সালকিয়ার ভৈরব ঘটক লেনের এক ছ’তলা নির্মীয়মাণ বিল্ডিংয়ের একটি বিদ্যুৎবাহী খোলা তার গত বৃহস্পতিবারের বৃষ্টির রাতে দোকানের শাটার স্পর্শ করে। তার সংস্পর্শে আসায় মৃত্যু হয় কলেজ ছাত্রী পৌরবী দাসের। সেই ঘটনার পরেই এলাকাবাসী ক্ষোভে ফুঁসছেন। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। আপাতত ঘটনার পরেই ওই বিল্ডিংটির নির্মাণ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার জন্য পুরসভা নোটিস দেয়। কিন্তু অভিযোগ, এমন দুর্ঘটনার পরেও ওই বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজ থামেনি। এ কথা জানার পরেই বিল্ডিংয়ের প্রোমোটার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাওড়া পুরসভা।

Advertisement

যদিও, হাওড়া পুরসভার আরও একটি সূত্র বলছে, ছাত্রীমৃত্যুর ঘটনার পর রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কথা বলেন পুর প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তীর সঙ্গে। তার পরেই হাওড়া পুরসভার তরফে প্রোমোটিং সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার কলকাতা পুরসভায় আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে হাওড়ার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন ফিরহাদ। তিনি জানিয়েছিলেন, এমন ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কলকাতা ও হাওড়া পুরসভা বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। যাতে এই বর্ষার মরসুমে জমা জলের সমস্যার মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কেউ মারা না যান, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছে দুই পুরসভা। অন্য দিকে, হাওড়া পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিল্ডিংয়ের নির্মাণেও প্রথম থেকেই ভুল ছিল বলে জেনেছে পুরসভা। তাই পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা বিল্ডিংয়ের প্ল্যান খতিয়ে দেখছেন। গাফিলতি ধরা পড়লে প্রোমোটিং সংস্থার বিরুদ্ধে তো বটেই, হাওড়া পুরসভার কোনও দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের কাজেও যদি কোনও ত্রুটি ধরা পড়ে, সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, নির্মীয়মাণ বিল্ডিংয়ে একটি মাত্র বৈধ মিটার রয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে অবৈধ ভাবে একাধিক সংযোগ টানা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সিইএসসিকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে। কারণ, বিল্ডিংটি থেকে একাধিক সংযোগ গিয়েছিল বাইরের দোকানগুলিতে। এবং তা একেবারেই নিয়ম মেনে হয়নি। তা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা কেন ব্যবস্থা নেয়নি, সেই বিষয়টি মূলত খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। হাওড়া পুরসভা এলাকায় আর এমন নির্মীয়মাণ বিল্ডিংয়ের কোথায় কোথায় খোলা বিদ্যুতের তার পড়ে রয়েছে, সে বিষয়ে নজর রাখছে হাওড়া পুর প্রশাসক বোর্ড। হাওড়া পুরসভার একাংশ মনে করছে, বেআইনি নির্মাণ নিয়ে প্রোমোটারদের বেপরোয়া মনোভাব এই ঘটনার জন্য দায়ী। গত মার্চ মাসে কলকাতার গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘটনার পরেও প্রোমোটারদের সম্বিত ফেরেনি। যে কারণে, হাওড়ার মতো জনবহুল শহরে নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে খোলা তার রাস্তায় পড়ে থাকলেও নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে সচেতন ছিল না প্রোমোটিং সংস্থা। তাই এই ধরনের বেপরোয়া প্রোমোটিং সংস্থাকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে কড়া আইনই একমাত্র হাতিয়ার হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement