উপচে পড়া জঞ্জাল। —ফাইল চিত্র।
হাওড়া শহরের ভ্যাটগুলিতে জমে থাকা আবর্জনা সরাতে রাতেও কাজ শুরু করল পুরসভার সাফাই বিভাগ। একই সঙ্গে শনিবার থেকে আবর্জনা তোলার এজেন্সিগুলি ডাম্পারের সংখ্যাও বাড়াল। আগামী সোম বা মঙ্গলবার ইদ। তার আগেই শহরের ভ্যাট থেকে উপচে পড়া জঞ্জাল সরাতে এই তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। অন্য দিকে, বেলগাছিয়া ভাগাড়ে যাতে আর নতুন করে ধস না নামে, তার জন্য ভাগাড়ের বড় আবর্জনার পাহাড়টি কেটে দ্রুত ছোট করার কাজ শুরু হয়েছে। সেই কাজও চলছে ২৪ ঘণ্টা।
শুক্রবারই হাওড়া পুরসভা শহরে জমে থাকা ১২০০ টন আবর্জনা কী ভাবে দ্রুত পরিষ্কার করা যায়, তা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে। বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, শনিবার থেকে এজেন্সিগুলিকে ডাম্পারের সংখ্যা বাড়াতে বলা হবে, যাতে সোমবারের মধ্যে শহর থেকে জমে থাকা পুরনো আবর্জনা সরিয়ে ফেলা যায়। সাফাই দফতর সূত্রের খবর, ওই নির্দেশ পাওয়ার পরেই এজেন্সিগুলি অতিরিক্ত ডাম্পার নিয়ে এসে শনিবার থেকে কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি, রাতেও আবর্জনা ধাপায় নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। হাওড়া শহরের আবর্জনা তোলার জন্য এজেন্সিগুলির ৫০ থেকে ৬০টি ডাম্পার চলে। কিন্তু অধিকাংশ ডাম্পার পুরনো ও খারাপ থাকায় সমস্যা হয়। এর পরেই পুরসভার নির্দেশে শনিবার থেকে ডাম্পারের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জমে থাকা আবর্জনা সোমবারের মধ্যে খালি করার কাজ ২৪ ঘণ্টা ধরে চলছে। অন্য দিকে, বেলগাছিয়া ভাগাড়ের বড় আবর্জনার পাহাড়টি কাটার জন্য বায়ো-মাইনিংয়ের কাজ শুধু রাতে নয়, সারা দিন ধরেই করা হচ্ছে। প্রতিদিন ১৬০০ থেকে ১৮০০ মেট্রিক টন আবর্জনা কমানোই লক্ষ্য। ভূমিধসের মতো ঘটনা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। কেটে ফেলা আবর্জনা আপাতত প্রক্রিয়াকরণের জন্য অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
এ দিকে, বেলগাছিয়া ভাগাড় এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের কন্টেনারের ঘর তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু তাঁরা অনেকেই তাতে থাকতে চাইছেন না। প্রশাসনের ঠিক করে দেওয়া এক কিলোমিটার দূরের স্কুলেও তাঁরা যেতে নারাজ। তবে স্থানীয় কোচিং সেন্টারের বাড়িতে প্রায় ১০০ জন বাসিন্দা বসবাস শুরু করেছেন। আর বাকিরা ভেঙে পড়া বাড়ির কাছে, কার্যত রাস্তাতেই থাকছেন। কিন্তু রাজ্যের মন্ত্রী ও প্রশাসন বার বার পুনর্বাসনের আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁরা জায়গা ছেড়ে যেতে নারাজ? বেলগাছিয়া ভাগাড়ের দায়িত্বে থাকা এক তৃণমূল কর্মী বলেন, ‘‘আসলে ওঁরা চাইছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে আশ্বাস দিন। ওঁরা ভয় পাচ্ছেন, এক বার চলে গেলে আর থাকার জায়গা মিলবে না।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ভাগাড়ের সকলকে পুনর্বাসন দেবে, এটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পরেও ওঁরা কেন ভয় পাচ্ছেন, জানি না।’’