নতুন যন্ত্র নিয়ে সমস্যা, ভোটের মুখে বিপাকে ২৮০০ শ্রমিক
Victoria Jute Mill

কাজ বন্ধের নোটিস ভিক্টোরিয়ায়

রাজ্যের প্রায় প্রত্যেক জুট মিলে এখন উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্র বসানো হচ্ছে। রাজ্য সরকার তথা শ্রম দফতর এই বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:২০
বন্ধ মিলের গেট (উপরে)। নোটিসে চোখ শ্রমিকদের। শনিবার ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া মিলের সামনে।

বন্ধ মিলের গেট (উপরে)। নোটিসে চোখ শ্রমিকদের। শনিবার ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া মিলের সামনে। নিজস্ব চিত্র।

দিন কয়েক আগে অচলাবস্থা শুরু হয়। শনিবার ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া জুট মিলে সাময়িক ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝোলালেন কর্তৃপক্ষ। ফলে, মিলের অন্তত ২৮০০ শ্রমিকের রুটিরুজির পথ বন্ধ হল। এ দিন শ্রমিক মহল্লায় হতাশার স্পষ্ট ছবি ধরা পড়ে। যদিও মিল বন্ধের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ জেলা শ্রম দফতরকে কিছুই জানায়নি বলে প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

Advertisement

ভদ্রেশ্বরের উপ-পুরপ্রধান ফিরোজ খান বলেন, ‘‘শ্রম দফতরে মিল কর্তৃপক্ষ কিছুই জানাননি। এটা ঠিক নয়। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। মিলে নতুন মেশিন নিয়ে একটা সমস্যা চলছে। কর্তৃপক্ষ ১৫ তারিখের পরে বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন। আশা করি, সব মিটে যাবে।’’

উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রায় প্রত্যেক জুট মিলে এখন উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্র বসানো হচ্ছে। রাজ্য সরকার তথা শ্রম দফতর এই বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে রাজ্য স্তরে একটি কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কোনও তাড়াহুড়ো নয়। ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সি কর্মীদের নতুন প্রযুক্তির কাজে সড়গড় করতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তার পরেই দক্ষতার ভিত্তিতে শ্রমিকদের ক্রমপর্যায়ে বিভিন্ন বিভাগে বদলির প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এর আগে নর্থ শ্যামনগর জুট মিলে নতুন প্রযুক্তির যন্ত্র নিয়ে শ্রমিক এবং মালিকপক্ষের বিরোধের জেরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। লোকসভা ভোটের মুখে এ বার একই সমস্যা দেখা দিয়েছে ভিক্টোরিয়া জুট মিলে।

ভিক্টোরিয়া জুট মিলের পার্সোনেল ম্যানেজার প্রদীপকুমার রাউত অবশ্য পরিস্থিতির জন্য শ্রমিকদের একাংশের কাজ না করতে চাওয়ার মানসিকতাকে দায়ী করছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মিলে ২০১৬ সাল থেকে নতুন যন্ত্রেই শ্রমিকেরা কাজ করছেন। কিন্তু গত দু’বছর ধরে শ্রমিকদের একটি ছোট অংশ উৎপাদনে মন দিচ্ছে না। শ্রমিক সংগঠনগুলি এবং আমরা বার বার ওঁদের বুঝিয়েছি। কিন্তু ওঁরা শুনছেন না। এমনকি, শ্রমিকদের এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগের স্থানান্তরও ওঁরা মানছেন না। এই ভাবে কত দিন আর কাজ চালানো যায়!’’

যদিও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ চটের ব্যাগের চাহিদার সমস্যার কথা জানিয়েছেন। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। অনুরোধ করেছি, শ্রমিক স্বার্থে যত দ্রুত সম্ভব মিলের দরজা খোলার জন্য।’’

জেলা শ্রম দফতর সূত্রের খবর, কারখানার গেটে যে নোটিস কর্তৃপক্ষ ঝুলিয়েছেন, তার কোনও প্রতিলিপি বিধি অনুযায়ী সরকারি দফতরে পাঠানো হয়নি।

আরও পড়ুন
Advertisement