গ্রামীণ হাওড়া থেকে রাজস্ব হারাচ্ছে ভূমি দফতর
Mutation

মিউটেশন ছাড়াই ফ্ল্যাট বিক্রির ধুম পঞ্চায়েতে

হাওড়া জেলায় দ্রুত নগরায়ণ হচ্ছে। বাগনান, আমতা, উদয়নারায়ণপুর, ডোমজুড় সাঁকরাইলের মতো গ্রামীণ এলাকাতেও নিত্যনতুন আবাসন মাথা তুলছে। লক্ষ লক্ষ টাকার ফ্ল্যাট কেনাবেচা হচ্ছে কোনও রকম মিউটেশন ছাড়াই।

Advertisement
নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৩২

—প্রতীকী চিত্র।

মিউটেশন (নামপত্তন) ছাড়াই হাওড়ার পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে ফ্ল্যাট বিক্রির প্রবণতা বেড়েছে বলে অভিযোগ। এর জেরে ব্যাঙ্ক ঋণ মেলা অনেক ক্ষেত্রে কঠিন হয়ে পড়ছে বলে বহু ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অন্যদিকে, রাজস্ব হারাচ্ছে ভূমি দফতর। পঞ্চায়েত এলাকায় ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে একমাত্র ওই দফতরই মিউটেশন করাতে পারে।

Advertisement

হাওড়া জেলায় দ্রুত নগরায়ণ হচ্ছে। বাগনান, আমতা, উদয়নারায়ণপুর, ডোমজুড় সাঁকরাইলের মতো গ্রামীণ এলাকাতেও নিত্যনতুন আবাসন মাথা তুলছে। লক্ষ লক্ষ টাকার ফ্ল্যাট কেনাবেচা হচ্ছে কোনও রকম মিউটেশন ছাড়াই, এমনটাই অভিযোগ। বাগনানের এক প্রোমোটার বলেন, ‘‘ভূমি দফতরে ফ্ল্যাটের মিউটেশন হয়। কিন্তু তাতে অনেক ঝামেলা। আাদের অনকেই আগ্রহ দেখান না। আমরা ক্রেতাকে দলিল রেজিস্ট্রি করে দিই। তার বেশি কিছু করতে পারি না।’’

পুর এলাকায় ফ্ল্যাটের মিউটেশন করে পুরসভা। এ ক্ষেত্রে প্রোমোটারের কাছ থেকে কেউ যখন ফ্ল্যাট কেনেন, তখন ক্রেতার নামে যেমন দলিল হয়, তেমনই সেই দলিলের ভিত্তিতে পুরসভা ক্রেতার নামে ফ্ল্যাট রেকর্ড করে দেয়। এর জন্য পুরসভা ০.৪ শতাংশ হারে রাজস্ব নেয়।

কিন্তু পঞ্চায়েত এলাকায় পঞ্চায়েতের হাতে সেই ক্ষমতা নেই। সেখানে কেউ ফ্ল্যাট কিনলে প্রোমোটার ক্রেতাকে রেজিস্ট্রি করে দেন। কিন্তু ক্রেতা যদি সেই ফ্ল্যাট তাঁর নামে রেকর্ড করাতে চান, সেটা পারেন না। কারণ, জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতি বা গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত কোথাও মিউটেশন হয় না। একমাত্র ভূমি দফতরই তা করতে পারে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রোমোটার ফ্ল্যাট-মালিকদের নামে মিউটেশন করাতে রাজি হন না বলে অভিযোগ।

কেন? প্রোমোটারদের অনেকেরই যুক্তি, তাঁরা ছাদ বিক্রি করছেন। জমি বিক্রি করছেন না। ক্রেতাদের অভিযোগ, মিউটেশন করানোর জন্য এ সংক্রান্ত শুনানিতে ভূমি দফতরে প্রোমোটাররা বেশির ভাগই যেতে রাজি হন না।

মিউটেশন না-করানোর ফলে ভূমি দফতর বহু টাকার রাজস্ব হারায়। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও আবাসন তৈরির জন্য অনুমতি দিতে হলে আমরা দেখি প্রোমোটার সেই জমির দলিল ও রেকর্ড যথাযথ দিয়েছেন কি না। আবাসন তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে আমাদের ইঞ্জিনিয়াররা গিয়ে দেখে আসেন নকশা অনুযায়ী নির্মাণকাজ হয়েছে কি না। কিন্তু যাঁরা ফ্ল্যাট কেনেন, তাঁদের মিউটেশন করতে পারে ভূমি দফতর। কিন্তু বেশির ভাগ ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রেই সেটা হয় না। এটা বড় সমস্যা।’’

অজয় মনে করেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জেলা পরিষদেই ভূমি দফতরের একটি আলাদা কার্যালয়ে ফ্ল্যাটের মিউটেশন করানো যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত একমাত্র নিতে পারে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। আমরা তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।"

আরও পড়ুন
Advertisement