শুয়োরের পায়ের চাপে গর্ত হয়ে গিয়েছে জমিতে। নিজস্ব চিত্র।
শুয়োরের উৎপাতে বন্ধ হয়েছে কয়েকশো বিঘে জমিতে চাষাবাদ। ফলে কাজে উৎসাহ হারাচ্ছেন চাষিরা। এই অবস্থা জগৎবল্লভপুরের বড়গাছিয়া ২ পঞ্চায়েতের মানসিংহপুরসহ বোহারিয়া, সন্তোষপুর হাঁটাল এলাকার। চাষিরা জানান, শুয়োরের উৎপাতে চাষ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন অনেকে। কাজ করছেন স্থানীয় কারখানায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই এলাকার প্রায় ১ হাজার বিঘা জমিতে বছরে ৩ বার চাষ হত। যার মধ্যে প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে আর চাষ হচ্ছে না। ধর্মেন্দ্র মান্না নামে এক চাষি জানান, বছর সাতেক আগে চারটি দম্পতি একপাল শুয়োর নিয়ে এলাকায় এসেছিলেন। চাষের জমির শেষ প্রান্তে তাঁরা আস্তানা করেছিলেন। পরে তাঁরা এলাকা ছাড়লেও শুয়োরগুলিকে এলাকায় রেখে যান। শুয়োরগুলি বনে পালায়। তবে ফসল পাকলে প্রায়ই তারা এই এলাকায় এসে সব তছনছ করে।
স্থানীয় ভাগচাষি বিনয় পাঁজা বলেন, ‘‘আমি ৮ বিঘা জমিতে চাষ করি। এই বছরে ৭ বিঘা জমিতে চাষ করেছিলাম। প্রায় এক বিঘা জমির পাকা ধান নষ্ট করে দিয়েছে শুয়োর।’’ অরবিন্দ মান্না নামে আর এক চাষির কথায়, ‘‘কচু, ওল চাষও বন্ধ করে দিয়েছি। প্রশাসন তো এই এদের আটকাতে কিছুই করছে না। আমরা তাই চাষ আর করতে চাই না।’’
এ প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই শুয়োর বন দফতরের আওতায় পড়ে না। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’ জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমরা চাষিদের কিছু সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছি। যেমন, চাষের খেত বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া, রাতপাহারার ব্যবস্থা করা।’’ এ ছাড়াও যাঁরা শুয়োর চরাতে আসেন, তাঁদের মধ্যেও সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি, যাতে সঙ্গের সমস্ত শুয়োর তাঁরা এলাকা ছেড়ে যাওয়ার সময়ে সঙ্গে নিয়ে যান।