—ফাইল চিত্র।
সোমবার অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন। সেই উপলক্ষে হাওড়ার রামরাজাতলায় রামমন্দিরে পুজো পাঠ করবেন রামসেবকরা। রবিবার থেকে শুরু হয়েছে তার প্রস্তুতি।
হাওড়ার রামরাজাতলায় রয়েছে বহু বছরের প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী রাম-সীতার পুজো। ভাগীরথীর পশ্চিমে হাওড়া জেলার এই এলাকা তৎকালীন সাঁতরাগাছি গ্রাম হিসাবে পরিচিত ছিল। সেই সময় সান্যাল পরিবার ‘চৌধুরী’ উপাধি লাভ করে ‘জমিদার’ বলে খ্যাতি লাভ করে। জনশ্রুতি, জমিদার অযোধ্যারাম চৌধুরী ও তাঁর পরিবার প্রতিদিন রামের পুজা করতেন বাড়িতে। এর পর স্বপ্নাদেশে রাম-সীতার পুজো শুরু হয়। লিখিত পুস্তিকা অনুযায়ী প্রায় আড়াইশো বছর আগে থেকে এখনও এই পুজো হয়ে আসছে। রামপুজোর জন্যই এই এলাকা রামরাজাতলা নামে পরিচিতি লাভ করে। গড়ে ওঠে জনপদ। দক্ষিণ পূর্ব রেল শাখায় স্টেশনের নাম হয় রামরাজাতলা। রাম নবমীর দিন এখানে ২২ ফুট চওড়া ও ১৬ ফুট লম্বা কাঠামোয় তৈরি সুবিশাল মাটির রাম সীতা ও অন্যান্য বিগ্রহের (মোট ২৬টি) পুজো শুরু হয়। চলে চার মাস। শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবার গঙ্গায় নিরঞ্জন হয়। তবে বছরের প্রতিদিন যাতে রাম-সীতা দর্শন করতে পারেন পুণ্যার্থীরা তার জন্য ঠাকুরের নতুন মন্দির তৈরি করে সেখানে মূর্তিস্থাপন করেছিলেন প্রয়াত প্রাক্তন বিধায়ক জটু লাহিড়ী। পুরনো মন্দির সংলগ্ন জায়গায় যা তৈরি হয়। বর্তমানে সমস্ত কিছুর দেখভাল করে রামরাজা পরিষদ।
কমিটির সম্পাদক উদয় চৌধুরী জানান, প্রাচীন পুজোর চার মাস ধরে চলে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। পুজো পাঠের সঙ্গে প্রতিদিন ভোগ বিতরণ হয়। প্রচুর জনসমাগম হয় এখানে। মেলা বসে। ২২ জানুয়ারী অযোধ্যায় রামমন্দির প্ৰতিষ্ঠা নিয়ে যদিও কমিটি কোনও অনুষ্ঠান করছে না। কারণ, তারা তাদের চিরাচরিত রীতিনীতিতে বিশ্বাসী। তবে কেউ পুজো করতে চাইলে আপত্তি নেই বলে জানান সম্পাদক। রামসেবকরা সোমবার বিশেষ পুজো ও হোম করবেন বলে জানান দেবেন্দ্র নাথ দাস নামে একজন সেবক। রবিবার মন্দির পরিষ্কার করা হয়। নিতু প্রসাদ নামে এক পুণ্যার্থী জানান, অযোধ্যার পুজো উপলক্ষে উপবাস করে আছেন তিনি। সেখানে যেতে না পারলেও রামরাজাতলায় রামমন্দিরে পুজো দিয়ে ভীষণ ভাল লেগেছে তাঁর। পরে অযোধ্যা ধাম যাবেন তিনি।