ডাক বিভাগের বিশেষ খামে চন্দননগর কলেজ। নিজস্ব চিত্র।
ভারতীয় ডাক বিভাগের বিশেষ খামে (স্পেশাল কভার) জায়গা করে নিল চন্দননগর কলেজের ছবি। এর আগে রাজ্যের তিনটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ খামে স্থান পেয়েছে। সরকারি হিসেবে চন্দননগর কলেজই প্রথম।
শনিবার কলেজের মূল ভবনের (হেরিটেজ বিল্ডিং) প্রেক্ষাগৃহে ওই খাম আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হয়। উপস্থিত ছিলেন পোস্ট মাস্টার জেনারেল (দক্ষিণবঙ্গ) ঋজু গঙ্গোপাধ্যায়, হেড পোস্ট মাস্টার (হুগলি) দেবরাজ শেঠি, চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী, ডেপুটি মেয়র মুন্না আগরওয়াল, ওই কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস সরকার-সহ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রাক্তনীরা। মেয়রের কথায়, ‘‘চন্দননগরের মুকুটে নতুন পালক জুড়ল।’’
১৮৬২ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পথচলা শুরু করেছিল চন্দননগর কলেজ। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে জড়িয়ে রয়েছে চারুচন্দ্র রায়, কানাইলাল দত্ত, রাসবিহারী বসুদের মতো বিপ্লবীদের নাম। ১৯০৮ থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত বিপ্লবী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার ‘অপরাধে’ ব্রিটিশ সরকারের চাপে টানা ২৩ বছর বন্ধ রাথা হয়েছিল ফরাসিদের হাতে থাকা এই কলেজ। ২০১০ সালে রাজ্য হেরিটেজ কমিশন এই ভবনকে হেরিটেজ (ঐতিহাসিক) ঘোষণা করে।
নানা ইতিহাসের সাক্ষী এই কলেজকে বিশেষ খামে জায়গা দিতে চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল ভারতীয় ডাক বিভাগ। সেই ডাকে সাড়া দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। পোস্ট মাস্টার জেনারেল (দক্ষিণবঙ্গ) ঋজু গঙ্গোপাধ্যায় জানান, সাধারণত কোনও বিষয়কে নিয়ে তৈরি বিশেষ খাম ছাপা হয় ৫০০ থেকে ২০০০। কিন্তু চাহিদা বাড়বে ধরে নিয়েই চন্দননগর কলেজের ঐতিহাসিক ভবনের ছবি সমৃদ্ধ খাম ৫ হাজার ছাপা হয়েছে।
ভবনের পাশাপাশি কলেজের লোগো-সহ কানাইলাল দত্ত, মতিলাল রায়, ঋষি অরবিন্দ, রাসবিহারী বসু ও চারুচন্দ্র রায়ের ছবি রয়েছে খামে। যা ডিজ়াইন করেছেন অধ্যক্ষ নিজেই। খামের অন্য পিঠে কলেজের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে বর্ণিত রয়েছে। নিয়মানুসারে বিদেশি ভাষা হওয়ায় সেখানে ফরাসি ভাষা স্থান পায়নি। তবে, কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুরোধ মেনে প্রতি খামের ভিতরে আলাদা কার্ডে ফরাসি হরফে লেখা হয়েছে কলেজের ইতিহাস। কলেজ কিংবা যে কোনও ডাকঘরে যোগাযোগ করলে ২০ টাকার বিনিময়ে এই খাম মিলবে বলে ডাক বিভাগ জানিয়েছে।