ভূপতি মজুমদারের মূর্তি উদ্বোধন করছেন বিধায়ক অসিত মজুমদার। চুঁচুড়ায়। নিজস্ব চিত্র
চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের সঙ্গে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় কাউন্সিলর ঝন্টু বিশ্বাসের ‘কোন্দল’ শহরে বহুচর্চিত। বৃহস্পতিবার সেই ঝন্টুর ওয়ার্ডেই বিপ্লবী ভূপতি মজুমদারের মূর্তি স্থাপনকে কেন্দ্র করে পুরনো দ্বন্দ্বই ফের একবার প্রকাশ্যে এল। এ দিন বিপ্লবীর মৃত্যুদিবসে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দেখা গেল না ঝন্টুকে। উপপুরপ্রধান পার্থ সাহা, পুর পারিষদ (পূর্ত) সৌমিত্র ঘোষ, প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কাউন্সিলর গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে ফিতে কেটে মূর্তির উদ্বোধন করেন বিধায়ক। তাঁকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি বলে অভিযোগ ঝন্টুর।
বালি মোড় কালীতলা অধিবাসীবৃন্দের উদ্যোগেই ভূপতির মূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়। ঝন্টুর অভিযোগ, পুরসভার জমিতে পুর কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে ওই মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। তিনি বলেন, ‘‘ভূপতি মজুমদারের মূর্তি স্থাপন নিয়ে আমার কোনও বিরোধিতা নেই। আমি নিজেও আশপাশের তিনটি বিকল্প জায়গার নাম দিয়ে ওই মূর্তি স্থাপনের দাবি জানিয়েছিলাম।
তা মানা হয়নি। আমাকে অনুষ্ঠানে ডাকাও হয়নি।’’
উদ্যোক্তাদের তরফে তৈরি কমিটির সম্পাদক জয়ন্ত মণ্ডলের দাবি, ঝন্টু তাঁদের পাড়ার বাসিন্দা। পাড়ার সকলকেই জানানো হয়েছে। একই দাবি করে বিধায়ক বলেন, "সকলকেই জানানো হয়েছে। পুরবোর্ডের মিটিংয়ে অনুমতি মিলেছে। নিয়ম মেনেই মূর্তিটি বসানো হয়েছে।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি পুরপ্রধান অমিত রায়কেও। অনুপস্থিতি নিয়ে তিনি অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ঝন্টু বরাবরই পুরপ্রধানের 'ঘনিষ্ঠ' বলে পরিচিত। অপর দিকে, তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায় উপপুরপ্রধান পার্থ সাহা-সহ বেশিরভাগ কাউন্সিলর অসিত অনুগামী।
ইতিহাস বলছে, হুগলির গুপ্তিপাড়ায় জন্মেছিলেন ভূপতি মজুমদার। তিনি ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ। তিনি বাঘা যতীনের নেতৃত্বে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। ‘বঙ্গভঙ্গ’ ও ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার জন্য তিনি বহুবার কারাবরণ করেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সঙ্গে সখ্যতা ছিল ভূপতির। কংগ্রেসের বাংলা শাখার সম্পাদকও হয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানও রেখেছিলেন।
এ দিকে ঘটনা জানাজানি হতে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘‘এটা নতুন নয়। শহর জুড়েই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল চলে।’’