আবাস যোজনার বাড়ি। —ফাইল চিত্র।
বার বার বদলাচ্ছে নিয়ম। ফলে, আবাস যোজনার উপভোক্তাদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছে হাওড়া জেলা প্রশাসন। কাজ কতদিনে শেষ হবে তা নিয়ে প্রশাসনের একাংশের যেমন সংশয় রয়েছে, তেমনই আগামী ১১ নভেম্বর থেকে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজও ঠিকমতো করা যাবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে নানা মহলে। কারণ, দু’টি কাজেরই দায়িত্বে ব্লক প্রশাসনের কর্মীরা। তাঁদের অনেকেই জানিয়েছেন, আবাসের কাজে তাঁরা নাজেহাল হচ্ছেন। জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি অবশ্য এমন কথা মানতে চাননি।
আবাস প্রকল্পের টাকা রাজ্যই দিচ্ছে। এ জন্য প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয় গত ২০ অক্টোবর থেকে। ২০২২ সালে আবাস প্লাসে যে সব উপভোক্তার নাম ছিল, দীর্ঘদিন ধরে টাকা না পেয়ে তাঁদের মধ্যে অনেকেই পাকা বাড়ি করে ফেলেছেন। তাঁদের নাম সমীক্ষা করে বাদ দিতে বলা হয় শুরুতেই।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সমীক্ষার কাজ প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলে। জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয় ইটের দেওয়ালের বাড়ি থাকলেই যেন নাম বাদ দেওয়া হয়। সমীক্ষা শেষে দেখা যায়, জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকে গড়ে ৫০ শতাংশ করে নাম বাদ গিয়েছে। ৩০ অক্টোবর ছিল তালিকা তৈরির শেষ দিন। কিন্তু তার আগেই নবান্ন থেকে ফের জেলা প্রশাসনের কাছে নির্দেশ আসে, পাকা বাড়ি থাকলেই নাম বাদ দেওয়া যাবে না। দেখতে হবে, সেই বাড়ির ঢালাই ছাদ আছে কি না। ছাদ থাকলে তবেই সেই নাম বাদ দেওয়া যাবে। টালি বা টিনের ছাউনি থাকলে নাম বাদ দেওয়া যাবে না। সেই মতো ফের বাদ পড়া নাম নিয়ে সমীক্ষা শুরু করে জেলা প্রশাসন। সেই সমীক্ষার কাজ শেষ হওয়ার আগে আবার বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ২০২২ সালের তালিকায় নাম থাকা যে সব প্রাপক পরে বিভিন্ন সূত্র থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি করেছেন, তাঁদেরও বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া যাবে।
নতুন নির্দেশিকা পেয়ে শুক্রবার থেকেই ফের মাঠে নেমেছেন ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক ও কর্মীরা। যাঁরা ছাদযুক্ত পাকাবাড়ি করেছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, ঋণ নিয়ে তাঁরা এই বাড়ি করেছেন কি না।
জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের একটি অংশের বক্তব্য, বার বার নির্দেশিকা বদল হওয়ায় তালিকা তৈরি করতে নাকাল হচ্ছে ব্লক প্রশাসন। এক-একটি ব্লকে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার করে উপভোক্তার নাম। বার বার প্রতিটি নাম নিয়ে সমীক্ষা করার ফলে সময় লাগছে। বাসিন্দাদের মধ্যেও নানা বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। আধিকারিক-কর্মীরা তালিকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় ব্লকের অন্যান্য কাজও ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়াও, ভূমি, প্রাণিসম্পদ, শিক্ষা-সহ বিভিন্ন দফতরের কর্মীরাও আবাসের কাজ করছেন। ফলে, ওই সব দফতরের নিজস্ব কাজও হচ্ছে না বললেই চলে। এমনটাই জানিয়েছেন ওই আধিকারিকেরা।