গ্রন্থাগারের জন্য কেনা হবে ২৫ লাখ টাকার বই। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এক কোটি টাকার বই বিক্রির লক্ষ নিয়ে এ বারের হুগলি জেলাগ্রন্থমেলা হচ্ছে চন্দননগর মহকুমায়। সরকারি ভাবে ২৫ লক্ষ টাকার বই কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে জেলার গ্রন্থাগারগুলির জন্য।
আগামী ২১ ডিসেম্বর মেলা শুরু হবে চন্দননগর শহরের মেরির মাঠে। চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেলার আয়োজন নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠক হল চন্দননগর পুরসভায়। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অমিতেন্দু পাল, মহকুমাশাসক (চন্দননগর) বিষ্ণু দাস, জেলা সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া, চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী সহ অন্যান্য পুরপ্রতিনিধি ও আধিকারিক, জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক ইন্দ্রজিৎপান প্রমুখ।
জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় জানান, এ বারের মেলার থিম ‘ভাষা দিয়ে সম্প্রীতি গড়ব’। বইয়ের প্রদর্শনী ও বেচাকেনার পাশাপাশি মেলার মঞ্চে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মেলার মঞ্চ মঞ্চ ও প্যাভিলিয়ন হবে সদ্য প্রয়াত এই জেলারই কবি অরুণ চক্রবর্তীর নামে। থাকবে তাঁর স্মৃতিচারণায় অনুষ্ঠান। গত বছর এই মেলা হয়েছিল শ্রীরামপুর মহকুমার জাঙ্গিপাড়ায়। বই বিক্রি হয়েছিল ৬১ লক্ষ টাকার। ২০২৩ সালে সদর মহকুমার বাঁশবেড়িয়ায় গ্রন্থমেলায় এই অঙ্ক ছিল ৪২ লক্ষ টাকা। ২০২২ সালে চন্দননগরের মেরির মাঠেই এই মেলায় বই বিক্রি হয়েছিল ৭৪ লক্ষ টাকার।
সুবীর জানান, সিদ্ধান্ত হয়েছে এ বার উত্তরপাড়ার জয়কৃষ্ণ সাধারণ গ্রন্থাগারের অর্থাৎ জেলা গ্রন্থাগারের জন্য ৪০ হাজার টাকার বই কেনা হবে। জেলার ২২টি শহর গ্রন্থাগারের জন্য ২০ হাজার টাকা করে এবং ১৩৫টি গ্রামীণ গ্রন্থাগারের জন্য ১৫ হাজার টাকা করে বই কেনা হবে। পুরোটাই সরকারি ভাবে কেনা হবে। এতে মেলায় বিক্রি অনেকটা বাড়বে, পাঠকেরাও উৎসাহিত হবেন।
পরিকাঠামোর অভাব এবং কর্মীসঙ্কটে জেলার বিভিন্ন গ্রন্থাগারের জেরবার অবস্থা। এক জন গ্রন্থাগারিককে একাধিক গ্রন্থাগারের দায়িত্ব সামলাতে হয়। এই পরিস্থিতিতে সরকারি উদ্যোগে গ্রন্থাগারগুলিতেবই কেনার সিদ্ধান্তে সাধুবাদজানাচ্ছেন পাঠকেরা। পাশাপাশি তাঁদের বক্তব্য, মোবাইল ফোনের যুগে এমনিতেই নতুন প্রজন্ম সে ভাবে বই পড়ায় উৎসাহী হচ্ছে না। তার উপরে সরকারি উদাসীনতায় গ্রন্থাগারের পরিস্থিতি আরও বেহাল হচ্ছে। এই অবস্থায় বই কেনার পাশাপাশি গ্রন্থাগারগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নের এবং কর্মী নিয়োগে তৎপর হোক গ্রন্থাগার দফতর। তাতে আরওপাঠক গ্রন্থাগারমুখী হবেন বলেতাঁদের বিশ্বাস।
শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের দাবি, বিভিন্ন গ্রন্থাগারের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। পাঠকক্ষে (রিডিং রুম) বাতানুকূল যন্ত্র বসানো থেকে সংস্কারের কাজ, ই-লাইব্রেরির ব্যবস্থা হচ্ছে। তবে কর্মীর অভাবের কথা তিনি মানছেন। তিনি বলেন, ‘‘পরিকাঠামো আগের থেকে উন্নত হয়েছে। গ্রন্থাগারিক নিয়োগের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। দ্রুত নিয়োগ হবে। তা হলেই সমস্যার সমাধান হবে। আমরা চাই আরও পাঠক গ্রন্থাগারমুখী হোক। সেই লক্ষ্যেই চেষ্টা চলছে।’’