Crisis of Recovery Van

‘রিকভারি ভ্যানে’র অভাব, বিকল গাড়ি সরানোয় সমস্যা

নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা বা গাড়ি খারাপ (ব্রেক ডাউন) হলে নিখরচায় তা সরানোর কথা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের। কিন্তু ‘রিকভারি ভ্যানের’ অভাবে এখানে তা অনেক সময় সম্ভব হয় না।

Advertisement
সুব্রত জানা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪ ০৫:৪৮
বিকল হয়ে যাওয়া গ্যাস ট্যাঙ্কার ঠেলে সরাচ্ছে পুলিশ। বাগনান মুম্বাই রোডে তোলা ছবি

বিকল হয়ে যাওয়া গ্যাস ট্যাঙ্কার ঠেলে সরাচ্ছে পুলিশ। বাগনান মুম্বাই রোডে তোলা ছবি

জাতীয় সড়ক মুম্বই রোডের প্রায় ৫৫ কিলোমিটার অংশের জন্য বরাদ্দ একটি মাত্র ‘রিকভারি ভ্যান’! দুর্ঘটনা ঘটলে বা গাড়ি বিগড়ে গেলে সমস্যায় পড়েন পুলিশ এবং গাড়িচালকেরা।

Advertisement

জাতীয় সড়ক কতৃর্পক্ষের থেকে বরাত পেয়ে হুগলির ডানকুনি থেকে হাওড়ার নাউপালা, অর্থাৎ, কোলাঘাট সেতুর আগে পর্যন্ত ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক বা মুম্বই রোড দেখভাল করে একটি সংস্থা। নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা বা গাড়ি খারাপ (ব্রেক ডাউন) হলে নিখরচায় তা সরানোর কথা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের। কিন্তু ‘রিকভারি ভ্যানের’ অভাবে এখানে তা অনেক সময় সম্ভব হয় না। কখনও পুলিশ ‘রিকভরি ভ্যান’ ভাড়া করে গাড়ি সরায়। ভাড়া গাড়ি না মিললে পুলিশকেই গাড়ি ঠেলতে হয়।

গত বৃহস্পতিবারই বেলা ১১টা নাগাদ বাগনানের লাইব্রেরি মোড়ে একটি গ্যাস ট্যাঙ্কার বিকল হয়ে যায় মুম্বই রোডে। জনা কুড়ি পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার স্থানীয়দের সাহায্যে সেটিকে ঠেলে রাস্তার পাশে আনেন। এলাকাবাসী জানান, এই ছবি প্রতিদিনের।

রামপ্রসাদ সাউ নামে এক ট্রাকচালক বলেন, ‘‘যন্ত্রাংশ খারাপ হলে রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করাতে হয়। জাতীয় সড়কের টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করলেও গাড়ি মেলে না। অথচ, পুলিশ এসে জরিমানা করে। আবার রিকভারি ভ্যানের জন্য মোটা টাকা ভাড়া দিতে হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘গাড়ি চালাতে কর দিতে হয়। জাতীয় সড়কে টোল দিতে হয়। কিন্তু গাড়ি খারাপ হলে সরকারের তরফে রিকভারি ভ্যান মেলে না।’’

পুলিশের একাংশও বিরক্ত। হাওড়া গ্রামীণ ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে বা গাড়ি খারাপ হলে দ্রুত ওই গাড়ি জাতীয় সড়ক থেকে সরাতে হয়। কেননা, কয়েক মিনিট রাস্তা বন্ধ থাকলেই ব্যাপক যানজট হয়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ‘রিকভারি ভ্যান’ আসতে অনেক সময় লেগে যায়। পুলিশের নিজস্ব ‘রিকভারি ভ্যান’ নেই। বাধ্য হয়েই ওই ভ্যান ভাড়া করতে হয়। কোনও কারণে তা না পেলে আশপাশের লোকজনকে নিয়ে পুলিশকেই গাড়ি ঠেলে রাস্তার ধারে নিয়ে যেতে হয়।

ওই পুলিশকর্তার দাবি, ‘‘সব গাড়িমালিক রিকভারি ভ্যানের ভাড়া দিতে চান না। তখন পুলিশকেই পকেট থেকে দিতে হয়।’’ তিনি জানান, পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন বৈঠকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে ‘রিকভারি ভ্যান’ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তাঁদের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওখানে আমাদের নিজস্ব একটি রিকভারি ভ্যান দিয়েই গাড়ি সরানো হয়। খবর পেলেই দ্রুত ওই গাড়ি পাঠানো হয়। তবে, এক সঙ্গে বেশি গাড়ি সরানোর পরিস্থিতি হলে সমস্যা হয়। সে ক্ষেত্রে পুলিশ নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা করে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement