জলমগ্ন খানাকুল-২ ব্লকের ধান্যগড়ি পঞ্চায়েতের কাকনান গ্রাম। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
মাস দেড়েক আগের বন্যায় দ্বারকেশ্বর নদের তিন জায়গায় বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল খানাকুল ২ ব্লকের ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েত এলাকা-সহ সংলগ্ন অঞ্চল। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে তুমুল বৃষ্টিতে নদ ভরে গিয়ে কাকনান এলাকার ভাঙন গিয়ে জল ঢুকে পড়ায় ফের প্লাবিত বিস্তীর্ণ অঞ্চল। রবিবার বিকেল পর্যন্ত মাঠ-ঘাটে প্রায় আড়াই ফুট জল দাঁড়িয়ে। জল কাকনানের পিচ রাস্তা ছুঁয়েছে। ফের উদ্বেগ বাড়ছে গ্রামবাসীদের।
বিডিও মধুমিতা ঘোষ পরিস্থিতির কথা মেনে বলেন, ‘‘আমরা নজর রাখছি। সতর্ক আছি। সেচ দফতর বাঁধ সংস্কারের কাজও শুরু করেছে।” সেচ দফতরের এক জেলা বাস্তুকার বলেন, “বাঁকুড়ায় আর বৃষ্টি হয়নি। সম্ভবত রবিবার রাতের মধ্যেই নদের জল কমে যাবে। রূপনারায়ণ কিছুটা ভরা থাকায় জল নামতে দেরি হচ্ছে।” তিনি জানান, দিন সাতেক আগে ধান্যগোড়ির দু’জায়গায় বাঁধের ভাঙন সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কাজ বন্ধ রাখতে হয়। জল নামলেই পুরোদমে কাজ শুরু হবে।
কাকনান গ্রামের পোড়েপাড়ার সাহেব পোড়ে, অনুপ পোড়ে, খুঁটেপাড়ার বিমল মালিক প্রমুখের অভিযোগ, নদের পলকা বাঁধ প্রতি বছর ভাঙে। তার জেরে জুলাই মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত তিন-চার বার বিপর্যস্ত হতে হচ্ছে। একদিকে বাঁকুড়া অববাহিকা থেকে আসা দ্বারকেশ্বর নদের জল, অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘাটালের দিক থেকে শিলাবতী নদীর চাপ। সর্বোপরি, রূপনারায়ণ নদের ঠেলা জলে তাঁরা বিপন্ন।
এ বার পঞ্চায়েত এলাকার দু’টি ভাঙন সংলগ্ন বিস্তীর্ণ চাষের জমিতে বালির পুরু স্তর পড়ে গিয়েছে। কম সময়ের মধ্যে সে সব সরিয়ে মূল অর্থকরী ফসল আলু চাষ হবে কি না, সংশয়ে গ্রামবাসী। চাষের জমির বালি পঞ্চায়েত থেকে সাফাই করার পরিকল্পনা করা হয়েছে জানিয়ে প্রধান কার্তিক ঘোড়া বলেন, “নভেম্বর মাস থেকেই আলু লাগানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু নতুন করে জলমগ্ন হওয়ার পর এই জল কবে নামবে, তারপর বালি তুলে কতটা জমি উদ্ধার করা সম্ভব, বোঝা যাচ্ছে না।” তিনি জানান, দ্বারকেশ্বর নদ সংলগ্ন পোড়েপাড়া ছাড়াও রূপনারায়ণ নদের ধান্যগোড়ি গ্রামের বেড়ার পাড়ার বাঁধটি ভেঙেছে। দু’টো ভাঙন থেকেই জল ঢুকছে। বিষয়টা ব্লক প্রশাসন এবং সেচ দফতরেরও নজরে আনা হয়েছে।