নতুন কী ওষুধ তৈরি করলেন বিজ্ঞানীরা? ফাইল চিত্র।
অসুখ সারাতে সঠিক ওষুধের প্রয়োগই একমাত্র পথ। কিন্তু সেই ওষুধই যখন আপৎকালীন সময়ে কাজ করে না, তখন অসুখ সারবে কিসে?
বর্তমান সময়ে সারা বিশ্ব সেই মারাত্মক সম্ভাবনার মুখেই দাঁড়িয়ে। জানা যাচ্ছে, অনেকের শরীরেই অ্যান্টিবায়োটিক আর ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। এর কারণই হল যখন তখন মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে ফেলার অভ্যাস। এর ফলে এক শ্রেণির ব্যাক্টেরিয়া ওষুধ-প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। যথেচ্ছ ভাবে রোগও ছড়াচ্ছে আর তার প্রতিকারের পথও ক্রমশই অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই সমস্যাই হল ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজ়িস্ট্যান্স’ বা ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজ়িস্ট্যান্স’, যার সমাধানের উপায় খুঁজতে তোলপাড় হচ্ছে বিশ্ব। ভারত সেখানে একটি নতুন ওষুধ তৈরি করে ফেলেছে, যা সাফল্যের মুখে বলে দাবি। ওষুধটির নাম জ়ায়নিচ যার ‘ক্লিনিকাল ট্রায়াল’ ৯৭ শতাংশ সফল হয়েছে বলে দাবি করছে প্রস্তুতকারী সংস্থা ওকহার্ট।
মুম্বইয়ের ওষুধ নির্মাতা সংস্থা ওকহার্ট এই ওষুধটি তৈরি করেছে যা দু’টি অ্যান্টিবায়োটিকের সংমিশ্রণ— জ়াইব্যাকটাম ও সেফেপাইম। ওষুধটি যে কোনও সংক্রামক ব্যাক্টেরিয়া জনিত রোগের প্রকোপ কমাতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে। সহজ করে বললে, অ্যান্টিবায়োটিকেও প্রতিরোধ করা যায় না, এমন সব ব্যাক্টেরিয়াদেরই ধ্বংস করবে এই ওষুধ।
চিকিৎসকেরা বলেন, অ্যান্টিবায়োটিকের অযথা প্রয়োগ শরীরের ক্ষতি করে বেশি। সাধারণত, ঋতু বদলের কালে সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। একই সঙ্গে বাড়ে যথেচ্ছ ওষুধ খাওয়ার প্রবণতাও। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা বহু সময় ধরেই চলছে, প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়েছে, কিন্তু তাতে অবস্থা বদলায়নি। ফলে দিনে দিনে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে সাধারণ অসুখবিসুখের জীবাণুরাও।
জ্বর, মূত্রনালির সংক্রমণ, পেটের অসুখ, সর্দি-কাশি বা গলায় সংক্রমণ সারাতে জন্য যে সব অতিচেনা ওষুধ রয়েছে, সেগুলিও ঠিকমতো কাজ করছে না এখন। ফলে নতুন করে নতুন গোত্রের ওষুধ তৈরির প্রয়োজন হচ্ছে। জ়ায়নিচ তেমনই এক অ্যান্টিবায়োটিক, যা আর পাঁচটা অ্যান্টিবায়োটিকের থেকে আলাদা বলেই দাবি করেছে মুম্বইয়ের ওকহার্ট ফার্মাসিউটিক্যালস। এটি এক ধরনের ‘কম্বিনেশন ড্রাগ’ যা নির্দিষ্ট ডোজ়ে রোগীকে খাওয়াতে পারলে ওষুধ-প্রতিরোধী জীবাণুদের ঠেকানো সম্ভব হবে বলেই দাবি। ওষুধটি নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা এখনও চলছে। মানুষের শরীরে পরীক্ষা করে দেখার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ নিয়ামক সংস্থা। এর ফল আশানুরূপ হলে তবেই ওষুধটিকে অনুমোদন দেওয়া হবে।