Chinsurah

চুঁচুড়ায় এ বার জল ও আলো বন্ধের হুঁশিয়ারি

আন্দোলনকারী অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মীরা মঙ্গলবার হুঁশিয়ারি দিলেন, আগামী শুক্রবারের মধ্যে বকেয়া মেটানো না হলে জল ও আলোর মতো জরুরি পরিষেবা থেকেও হাত গুটিয়ে নেবেন তাঁরা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৬
রাস্তা অবরোধ এলাকাবাসীর। চুঁচুড়ার পিরতলায়।

রাস্তা অবরোধ এলাকাবাসীর। চুঁচুড়ার পিরতলায়। —নিজস্ব চিত্র।

পুর-কর্তৃপক্ষ এখনও আশার আলো দেখাননি। ফলে, হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভায় অচলাবস্থা কাটল না প্রশাসন নির্ধারিত ১৫ দিনেও। উল্টে আন্দোলনকারী অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মীরা মঙ্গলবার হুঁশিয়ারি দিলেন, আগামী শুক্রবারের মধ্যে বকেয়া মেটানো না হলে জল ও আলোর মতো জরুরি পরিষেবা থেকেও হাত গুটিয়ে নেবেন তাঁরা। মঙ্গলবার বিকেলে নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পরে তাঁদের তরফে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানান রাধেশ্যাম শঙ্খবণিক।

Advertisement

তেমন হলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হবে বলে মানছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল। বিভিন্ন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত শহরবাসীর একাংশ মনে করছেন, সামনে কোনও ভোট না থাকায় প্রশাসন তথা রাজ্য সরকারও সমস্যা সমাধানে বিশেষ গা করছে না। মহকুমাশাসক (সদর) স্মিতা সান্যাল শুক্ল অবশ্য বলেন, ‘‘আমার যেখানে জানানোর, জানিয়েছি। প্রক্রিয়া চলছে। দেখা যাক, কী হয়!’’

ওই পুরসভায় অস্থায়ী শ্রমিকদের অনিয়মিত বেতনের সমস্যা নতুন নয়। বকেয়া মজুরির দাবিতে টানা ১৭ দিন ধরে ওই শ্রমিক-কর্মীদের কর্মবিরতি চলছে। সমস্যা সমাধানে শুরুতেই তৎপর হয়েছিলেন মহকুমাশাসক (সদর)। বিধায়ক অসিত মজুমদার, পুরপ্রধান অমিত রায় ও পুর-আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। অসিতের দাবি, তিনি অন্য ব্যাপারে জেলাশাসকের কাছে গিয়েছিলেন।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, এর আগে প্রশাসনের তরফে আশা প্রকাশ করা হয়েছিল, ১৫ দিনেরমধ্যে সমস্যা মিটে যাবে। মঙ্গলবার সেই সময়সীমা শেষ হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, সেই প্রশ্ন ঘুরছে জেলা সদরে। শ্রমিকরা কাজ না করায় শহর জঞ্জালে ভরেছে।বিভিন্ন পরিষেবা বা সরকারি প্রকল্পের কাজে পুরসভায় গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে শহরবাসীকে। জমছে ক্ষোভ। মোগলটুলির এক যুবতীর কটাক্ষ, ‘‘কেন্দ্রের সমীক্ষায় এই বছরেই নোংরা শহরের তকমা পেয়েছে আমাদের শহর। সেই তকমা ধরে রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেনপুর-কর্তৃপক্ষ!’’

৩০ আসনের এই পুরসভার একটি ওয়ার্ড সিপিএমের দখলে। বাকি ২৯টি তৃণমূলের। ভোট নেই বলেই কি হেলদোল নেই?

রাস্তায় জমেছে আবর্জনা। চুঁচুড়ার আখনবাজারে।

রাস্তায় জমেছে আবর্জনা। চুঁচুড়ার আখনবাজারে। —নিজস্ব চিত্র।

এই প্রশ্নে এলাকার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মন্তব্য করতে পারব না। কারণ, পুরসভার আমি কেউ নই। দলও আমাকে হস্তক্ষেপ করতে বলেনি।’’ চাঁপদানির বিধায়ক তথা তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের মন্তব্য, ‘‘বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। আগে জেনে নিই, তারপরে মন্তব্য করব।’’

এলাকায় আবর্জনা জমায় এ দিন চুঁচুড়ার পিরতলায় অবরোধ করেন স্থানীয়েরা। সামনেই বড়দিন, নববর্ষ। এই শহরে রয়েছে ব্যান্ডেল চার্চ, ইমামবাড়ার মতো পর্যটনকেন্দ্র। পরিষেবা স্বাভাবিক না হলে পর্যটকেরা শহরের কী ছবি দেখবেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না!

Advertisement
আরও পড়ুন