Newborn Exchange

হাসপাতালে সন্তান বদলের অভিযোগ

বুধবার সকালে চন্দননগর হাসপাতালের এই ঘটনায় প্রবল গোলমাল শুরু হয়। যুবকের দাবি, তাঁর সন্তান বদলে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দননগর শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪ ০৬:০৪
সদ্যোজাত শিশু বদলের অভিযোগে চনাদননগর মহাকুমা হাসপাতালে পরিবারের সদস্যদের ক্ষোভ।

সদ্যোজাত শিশু বদলের অভিযোগে চনাদননগর মহাকুমা হাসপাতালে পরিবারের সদস্যদের ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

অপারেশন থিয়েটারের বাইরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন যুবক। ভিতরে তাঁর স্ত্রী সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন। কিছুক্ষণ পরে বেরিয়ে এলেন এক পুরুষ কর্মী। সদ্যোজাতকে দেখিয়ে বললেন, পুত্রসন্তানের জন্ম হয়েছে। প্রথম সন্তানের জন্মের আনন্দে কার্যত চোখে জল বাবার। কাগজপত্রে সইসাবুদ করে দেন তিনি।

Advertisement

এর মিনিট পনেরো পরে ওটি থেকে বেরিয়ে আসেন এক জন নার্স। তাঁর কোলেও এক সদ্যোজাত। যুবককে ডেকে বলা হয়, একটু ভুল হয়ে গিয়েছে। আসলে তাঁর স্ত্রী কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এখন যে কোলে, সেই সন্তানটি তাঁর।

বুধবার সকালে চন্দননগর হাসপাতালের এই ঘটনায় প্রবল গোলমাল শুরু হয়। যুবকের দাবি, তাঁর সন্তান বদলে দেওয়া হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার দাবি জানান তিনি। লোকজন জড়ো হয়ে যায়। পুলিশ আসে। দিনভর এ নিয়ে গোলমাল চলে হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে কিনা, তা জানাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সুপার সন্তু ঘোষ বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। কারও গাফিলতি আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’

মাস কয়েক আগে এই হাসপাতালেই অপারেশন থিয়েটারের কর্মীদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। সে বার একটি মৃত সন্তানের জায়গায় দু’টি মৃত সন্তান প্রসূতির পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পোলবার হারিটের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রায় স্ত্রী ঋতুকে হাসপাতালে ভর্তি করান। ঘণ্টাখানেক পরে ঋতুকে ওটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। ওটির বাইরে ছিলেন বিশ্বজিৎ। তাঁর দাবি, কিছুক্ষণ পরে ওটির ভিতর থেকে এক নার্স বেরিয়ে এসে এক সদ্যোজাতকে দেখিয়ে জানান, ছেলে হয়েছে। একটি কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়। পরিস্থিতি বদলে যায় মিনিটপনেরোর মধ্যেই।

বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘ছেলে হোক বা মেয়ে— আমার কোনও কিছুতেই আপত্তি নেই। কিন্তু আমাকে দু’টি সদ্যোজাতকে দেখানো হয়েছে। তা হলে কোনটি আমার, কী করেবুঝব!’’ নিশ্চিত হওয়ার জন্যে তিনি ডিএনএ পরীক্ষার দাবি জানান। প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানান।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, এখনই ছুটি পাচ্ছেন না ঋতু। ফলে কোন সন্তানটি তাঁর, তার নিষ্পত্তি হয়নি বুধবার। স্থানীয় লোকজনের দাবি, দু’টি সন্তানের বাবা-মা যদি আলাদা হবেন, তা হলে অন্য সন্তানের মা-বাবা গেলেন কোথায়? এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু জানাতে চাননি। এ দিনের মতো গোলমাল থামলেও কাটেনি ধোঁয়াশা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement