খানাকুলের রাজহাটির করুণাময়ী সঙ্ঘের কুমারী কার্নিভালের একটি মুহূর্ত। নিজস্ব চিত্র।
বিভিন্ন পুজোয় বিশেষত শোভাযাত্রার সময় বক্সের তাণ্ডবে অস্থির হতে হত চণ্ডীতলার মানুষকে। এ বার দুর্গাপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রাতেও একই পরিস্থিতি হয়। শেষে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। বক্স বাজেয়াপ্ত, ধরপাকড় করা হয়। এরপরে কালীপুজোয় কয়েকটি পুজো কমিটি ডিজে বক্সের পরিবর্তে লোক সংস্কৃতিকে শোভাযাত্রায় ঠাঁই দিয়েছিল। আগামী কাল, সোমবার জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রাতেও তেমনই হতে চলেছে বলে দাবি হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা এবং সংস্কৃতি ও তথ্য কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়ের।
তাঁর দাবি, শোভাযাত্রা সাজবে শ্রীখোল, কীর্তন, পুরুষ ও মহিলা ঢাকি, রণপা, আদিবাসি নাচ, ছৌ, আদিবাসী নাচ ইত্যাদির মাধ্যমে। তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের মাধ্যমে তাদের আওতায় থাকা শিল্পীদের আনা হচ্ছে। এই শিল্পীরা রাজ্য সরকারের ভাতা পান। অনুষ্ঠানের জন্যও পারিশ্রমিক মেলে। পান্ডুয়া, বলাগড়েও এ ভাবে লোক অনুষ্ঠান হবে। তাঁর কথায়, ‘‘চণ্ডীতলায় ডিজে বক্সের শব্দের প্রাবল্যে মানুষের যে অসুবিধা হত, সন্দেহ নেই। সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতেই সুস্থ সংস্কৃতিকে হাতিয়ার করা হচ্ছে। আমরা ডিজের বিরুদ্ধে লড়ছি।’’ সাধারণ মানুষের বক্তব্য, আগে নানা প্রতিশ্রুতি বিফলে গিয়েছে। তাঁরা চান, এ বার আশ্বাস অনুযায়ী ফল হোক।
সুবীর জানান, উল্কা সঙ্ঘ, ইভিনিং স্টার ক্লাব, চণ্ডীতলা অ্যাথলেটিক ক্লাব (কুমারপাড়ার) এবং কালীপুর তরুণ সঙ্ঘ— এই চারটি পুজোর তরফে লোকসংস্কৃতির দলের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সোমবার চণ্ডীতলা বাজার এলাকায় শোভাযাত্রার পরে পুকুরে বা সরস্বতী নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।
ইভিনিং স্টারের কোষাধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ প্রতিহার বলেন, ‘‘ডিজের শব্দে আট থেকে আশি বছরের মানুষ— সকলেই সমস্যায় পড়েন। এ বছর আমাদের ক্লাব ডিজের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে।’’ কুমারপাড়ার ওই পুজোর সহ সভাপতি গৌতম কোঙাড় বলেন, ‘‘ডিজের বিকল্প হিসাবে এই উদ্যোগ ভাল হয়েছে।’’
হুগলির বাজি ও ডিজে বক্স বিরোধী মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক গৌতম সরকারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘খুব ভাল উদ্যোগ, তবে কার্যকর করাই আসল। লোকসংস্কৃতির চর্চা খুবই ভাল। অন্যদেরও এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা দরকার।’’