Paddy Harvest

জমা জলে আমনে ক্ষতির আশঙ্কা ওড়ালেন কৃষিকর্তা

পুরশুড়া, আরামবাগ এবং খানাকুলের দু’টি ব্লকে এখনও কোথাও খাল উপচে জল ঢোকেনি। তবে, বৃষ্টির জলেই ধানের চারা ডুবে গিয়েছে।

Advertisement
বিশ্বজিৎ মণ্ডল
বলাগড় শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৪ ১০:২০
রাস্তায় হাঁটুজল। সাইকেল কাঁধে পার। গোঘাটের কামারপুকুরের সাতবেড়িয়ায়।

রাস্তায় হাঁটুজল। সাইকেল কাঁধে পার। গোঘাটের কামারপুকুরের সাতবেড়িয়ায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

টানা দু’দিনের বৃষ্টিতে আরামবাগ মহকুমার মাঠঘাট ভরে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে গোঘাট, আরামবাগ এবং খানাকুলে বিভিন্ন খাল উপচে খেতে জল ঢুকতে শুরু করে। ভৌগোলিক ভাবে নিচু এ তল্লাটের বিভিন্ন খাল ও নদনদীর জলও বাড়তে থাকায় খেতে জমা জল বেরোনোর পথ পাচ্ছে না। ফলে, সদ্য রোপণ করা আমন ধান নষ্টের আশঙ্কা করছেন বহু চাষি। কৃষি দফতরের দাবি, আশঙ্কার কারণ নেই।

Advertisement

শুক্রবার সকালেই গোঘাট ২ ব্লকে আমোদর নদ সংলগ্ন পশ্চিমপাড়া, কামারপুকুর, মান্দারণ, হাজিপুর পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার আমন ধানের জমি ২-৩ ফুট জলের তলায় চলে যায়। কামারপুকুর পঞ্চায়েতের পশ্চিম আমরপুর গ্রামের চাষি ফটিক কাইতি, মান্দারণের শেখ আব্দুল হালিম প্রমুখ জানান, দিন পাঁচ-দশ আগে আমন ধান রোপণ শুরু হয়েছে। এখনও ভাল করে চারাগুলি মাটি আঁকড়ে ধরেনি। সেগুলি জলের তোড়ে যেমন ভেসে যাচ্ছে, তেমনই যে সব ধানগাছের শিকড় হয়েছে, সেগুলি দিন দুয়েক ডুবে থাকলেই গাছ পচে নষ্ট হবে বলে তাঁরা আশঙ্কা করছেন।

পুরশুড়া, আরামবাগ এবং খানাকুলের দু’টি ব্লকে এখনও কোথাও খাল উপচে জল ঢোকেনি। তবে, বৃষ্টির জলেই ধানের চারা ডুবে গিয়েছে। চাষিদের বক্তব্য, ডুবে থাকা চারায় ইতিমধ্যে পচন ধরেছে। সবই নষ্ট হবে। ওই সব জমির ধান ফের রোপণ করার চারা পাওয়া সমস্যা হবে। নতুন করে বীজতলা করে ফের রোপণ করলে পরবর্তী আলু চাষও পিছিয়ে গিয়ে ভাল ফলন মিলবে না।

কৃষি দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার জেলায় ১০৪.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবার হয়েছে ৬৬.৬৩ মিলিমিটার। যা এই সময় পর্যন্ত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের প্রায় ৩৫ শতাংশ কম। তবে, গত বছরের জুলাই থেকে অগস্টের ২ তারিখ পর্যন্ত যা বৃষ্টিপাত হয়েছে, এ বার তার চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি হয়েছে। আমন ধানের জমি দিয়ে জল বয়ে গেলে সেই ধান পাঁচ থেকে সাত দিন পর্যন্ত টিকে থাকার নজির আছে।

জল জমে গোঘাট ২ ব্লকের সাতবেড়িয়া থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হলদি থেকে বাঁকুড়া বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খানাকুলের গড়েরঘাটে রূপনারায়ণ নদের উপর সাঁকো ভেঙেও পশ্চিম মেদিনীপুরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এ দিন থেকেই ডিভিসির ছাড়া ৩৬ হাজার কিউসেক জলে ফুলছে দামোদর এবং তার শাখা মুণ্ডেশ্বরী নদী। দ্বারকেশ্বর নদও ভরে উঠছে বাঁকুড়া ক্যাচমেন্ট বেসিন থেকে আসা ৩১ হাজার কিউসেক জলে। মহকুমার রূপনারায়ণ নদের জলস্তরও বাড়ছে বলে সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement