বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
নভেম্বরের শেষে ঘোষণা করেছিলেন। নতুন বছরের দ্বিতীয় দিনে নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে স্বাস্থ্য পরিষেবার কর্মযজ্ঞের সূচনা করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যা চলবে ২০ মার্চ পর্যন্ত। ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভায় সাত দফায় হবে স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত কর্মসূচি। যার পোশাকি নাম ‘সেবাশ্রয়’। যাকে সাংসদ অভিষেক বর্ণনা করেছেন, ‘দুয়ারে স্বাস্থ্য পরিষেবা’ হিসাবে।
এই কর্মসূচিতে যুক্ত হচ্ছেন ১২০০ চিকিৎসক, ৫০০ ডায়াগনস্টিশিয়ান। থাকছেন ১৫০০ স্বেচ্ছাসেবকও। সেবাশ্রয়ের সূচনা করে অভিষেক বলেছেন, ‘‘এই কর্মসূচি গোটা দেশকে পথ দেখাবে।’’ প্রতিটি বিধানসভায় একটি করে ‘মডেল ক্যাম্প’ থাকবে। সেখানে চিকিৎসক থাকবেন তিন জন। সাধারণ ক্যাম্পে থাকবেন দু’জন করে চিকিৎসক। যদি কোনও রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হয়, তার জন্যও প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
কার্যত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোই রাখা হচ্ছে শিবিরগুলিতে। থাকছে নেবুলাইজ়ার, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, সার্জিক্যাল কিট, হুইলচেয়ার, স্ট্রেচার, ডিজিটাল থার্মোমিটার, পাল্স অক্সিমিটার, মাস্ক, গ্লাভস এবং স্যানিটাইজার। একাধিক পরিচিত চিকিৎসকও অংশ নিচ্ছেন এই কর্মসূচিতে। শুরুর দিনেই ছিলেন অভীক ঘোষ, অনির্বাণ দলুই, পার্থ মণ্ডল, রৌনক হাজারি, মিনাজউদ্দিনেরা। চিকিৎসকদের নিয়ে নভেম্বরে প্রস্তুতি বৈঠক করেছিলেন অভিষেক। যাকে আরজি কর পর্বের পরে চিকিৎসকমহলের সঙ্গে শাসকদলের ‘সেতুবন্ধন’ হিসাবে অভিহিত করা হয়েছিল। সেই কাজের ক্ষেত্রে নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন। যদিও ‘নানা কাজের চাপে’ বৃহস্পতিবার তিনি ডায়মন্ড হারবারে যেতে পারেননি। কোভিডের সময়ে এক দিনে রেকর্ড টেস্ট করিয়ে ডায়মন্ড হারবার মডেল তুলে ধরেছিলেন অভিষেক। ফের সেখানেই স্বাস্থ্যে নতুন ‘মডেল’ হাজির করলেন সাংসদ। ‘সেবাশ্রয়’ সূচনার দিন রাজনৈতিক নেতা বলতে ছিলেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা, বজবজের বিধায়ক অশোক দেব, ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক পান্নালাল হাজরা। বৃহস্পতিবার ডায়মন্ড হারবার বিধানসভায় এই কর্মসূচির সূচনা হয়েছে। এটি চলবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই বিধানসভায় চলবে ৪১টি শিবির। আবার ১২ জানুয়ারি থেকে শিবির শুরু হবে ফলতায়। চলবে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফলতায় ক্যাম্প হবে ৪০টি। ২২-৩১ জানুয়ারি এই পরিষেবা দেওয়া হবে বিষ্ণুপুর বিধানসভায়। মোট ক্যাম্পের সংখ্যা ৪৭টি। ফেব্রুয়ারির ১ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত ৩৬টি শিবির চলবে মেটিয়াবুরুজে। তবে ৩ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজোর দিন কর্মসূচি বন্ধ থাকবে। সাতগাছিয়া বিধানসভা এলাকায় হবে ৪৫টি শিবির। সেখানে এই পরিষেবা ১২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হবে ২১ ফেব্রুয়ারি। ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত শিবির হবে বজবজে। মোট ক্যাম্প থাকবে ৪২টি। মহেশতলার ৪৫টি শিবির শুরু হবে ৪ মার্চ। চলবে ১৩ মার্চ পর্যন্ত। তার পর ১৬-২০ মার্চ পর্যন্ত সাতটি বিধানসভায় হবে ‘ফলোআপ ক্যাম্প’। অর্থাৎ যে মানুষ প্রথম বার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাবেন, তাঁদের অনেকের ক্ষেত্রেই চিকিৎসকেরা ওষুধ দিয়ে কিছু দিন দেখে নেবেন। সেই রোগীদের পরবর্তী চিকিৎসা হবে ১৬-২০ মার্চ।