ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন চলছে। —ফাইল চিত্র।
জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন নবম দিনে পড়েছে রবিবার। এই মুহূর্তে ধর্মতলায় আমরণ অনশন করছেন সাত জন ডাক্তার। উত্তরবঙ্গে রয়েছেন আরও এক জন। ১৮০ ঘণ্টারও বেশি সময় অতিক্রান্ত তাঁদের অনশনের। তিন জন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে। কেমন আছেন অনশনরত আট জুনিয়র ডাক্তার?
রবিবার সকালে আট জনের শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে ধর্মতলার মঞ্চে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, স্নিগ্ধা হাজরার রক্তচাপ ১০২/৭২। তাঁর নাড়ির গতি ৮৮ এবং ক্যাপিলারি ব্লাড গ্লুকোজ় (সিবিজি) ৬৮। তনয়া পাঁজার রক্তচাপ ১০৮/৭৬। তাঁর নাড়ির গতি ৯৪ এবং সিবিজি ৭০। সায়ন্তনী ঘোষ হাজরার রক্তচাপ ১০৬/৭৮। তাঁর নাড়ির গতি ৮২ এবং সিবিজি ৬৯। পুলস্ত্য আচার্যের রক্তচাপ ১১২/৮৬। তাঁর নাড়ির গতি ৮৮ এবং সিবিজি ৭০। অর্ণব মুখোপাধ্যায়ের রক্তচাপ ১২০/৯০। তাঁর নাড়ির গতি ৮৮ এবং সিবিজি ৬৬। উত্তরবঙ্গের সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রক্তচাপ ১০০/৬০। তাঁর নাড়ির গতি ৮০ এবং সিবিজি ৮৭। উল্লেখ্য, আগেই চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, সিবিজি ৬০-এর নীচে নেমে গেলে তা উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কিডনিও বিকল হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অর্ণব, স্নিগ্ধা এবং সায়ন্তনীর সিবিজি এখন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর আগে স্নিগ্ধা এবং সায়ন্তনীর সিবিজি আরও নেমে গিয়েছিল।
শনিবার, ৫ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টা থেকে ধর্মতলায় অনশনে বসেছিলেন ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার। রবিবার তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন অনিকেত মাহাতো। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই ডাক্তার সৌভিক এবং অলোক বর্মাও অনশন শুরু করেছিলেন। কিন্তু টানা অনশনের জেরে অনিকেতের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন অলোক। তাঁকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শনিবার রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কলকাতা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়কে। পেটে যন্ত্রণা হচ্ছিল তাঁর। মলের রং হয়েছিল কালো। ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, শরীরের ভিতরে কোথাও রক্তক্ষরণ হলে মলের রং কালো হয়ে থাকে। অনুষ্টুপের ক্ষেত্রে কোথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে, তা জানার জন্য রবিবার এন্ডোস্কোপি করা হবে।
অনিকেতদের অসুস্থতার মাঝেই নতুন করে ধর্মতলার অনশনে যোগ দিয়েছেন পরিচয় পাণ্ডা এবং আলোলিকা ঘোড়ুই। অনশনকারী ডাক্তারেরা মূলত জল খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। ফলে বার বার শৌচাগারে যেতে হচ্ছে তাঁদের। উপস্থিত অন্য সহযোদ্ধারা ধরে ধরে তাঁদের শৌচাগারে নিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, অনশনকারীরা অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন। যদিও তাঁদের মনের জোর এখনও অটুট রয়েছে বলেই দাবি করছেন আন্দোলনকারীরা।