বর্ষপূর্তিতে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি রাজ্যপাল আনন্দ বোসের। ফাইল চিত্র।
বাংলায় আসার বর্ষপূর্তির দিনেও ‘সংঘাত পত্র’ পাঠালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তা-ও আবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে। গত সাড়ে ১২ বছরে ২২টি বিল আটকে রয়েছে রাজভবনে। সম্প্রতি এমনটাই অভিযোগ করে আসছিলেন বিধানসভার স্পিকার। রাজভবন সূত্রে খবর, তাঁর এমন অভিযোগের জবাব হিসাবেই রাজভবন থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বিধানসভায়। যাকে বাংলার রাজনীতির কারবারিরা, ‘সংঘাত-পত্র’ হিসাবেই দেখছেন। যেখানে বিল সংক্রান্ত একটি তালিকা গিয়েছে স্পিকারের কাছে। সেখানে কোন বিল কী অবস্থায় রয়েছে, তা বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজভবনে বর্ষপূর্তি হয়েছে রাজ্যপালের। এক বছর আগে এই দিনেই রাজ্যের রাজ্যপালের দায়িত্বে এসেছিলেন তিনি। সেই উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকেও আনন্দ বোস দাবি করেন, কোনও বিল রাজভবনে আটকে নেই। আর বিকেলেই রাজ্যপালের দফতর থেকে বিধানসভার বিল সংক্রান্ত একটি তালিকা পাঠানো হয় বিধানসভায়। রাজভবনের চিঠি তাঁর দফতরে পৌঁছনোর কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্পিকার। তিনি বলেছেন, ‘‘রাজভবন থেকে পাঠানো চিঠি পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে।’’
রাজভবন সূত্রে খবর, ওই তালিকায় মোট ২২টি বিলের উল্লেখ রয়েছে। ২০১১-২৩ সাল পর্যন্ত ওই ২২টি বিল আটকে থাকার অভিযোগ করেছিলেন স্পিকার। একই অভিযোগ রাজ্য সরকারেরও। সেই প্রসঙ্গে রাজভবন থেকে পাঠানো তালিকায় বলা হয়েছে, ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রোটেকশন অফ ইন্টারেস্ট অফ ডিপোজ়িটার্স ইন ফিন্যান্সিয়াল এস্টাবলিশমেন্টস বিল ২০১৩’ শর্তসাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পাওয়ার পর তা ২২ এপ্রিল ২০১৫ সালে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, জেসপ ও ডানলপ অধিগ্রহণ নিয়ে বিধানসভায় পাশ হওয়া দু’টি বিল ২০১৬ সাল থেকে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর জন্য বেশ কয়েকটি বিল পাশ করা হয়েছিল ২০২২ সালে। সেই সব ক’টি বিলকেই বিচারাধীন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন বিলের সংখ্যা সাত। ১২টি বিল প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
গত ৮ অক্টোবর রাজভবন থেকে বিধানসভায় আটকে থাকা বিল নিয়ে একটি বিবৃতি জারি করেছিলেন রাজ্যপাল। সেখানে জানানো হয়েছিল, বিল দ্রুত ছাড়তে একটি নীতি চালু করেছেন রাজ্যপাল। যেখানে তিনি মন্ত্রী ও সচিবদের সঙ্গে আলোচনার অব্যবহিত পরেই তাঁর সিদ্ধান্ত জানাবেন। আর বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশের কথায়, স্পিকারকে এমন জবাব পাঠিয়ে রাজ্যপাল আসলে বিল পাশ করার ক্ষেত্রে যাবতীয় দায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দিকেই ঠেলে দিয়েছেন।