TMC

TMC: গোয়া থেকে কালীঘাট, কংগ্রেসের হাত ছেড়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফেলেইরো এলেন মমতার ঘাসফুলে

প্রায় ৪০ বছর কংগ্রেসে ছিলেন ফেলেইরো৷ গোয়ায় দু’বার মুখ্যমন্ত্রী থেকেছেন। একটা সময় গোয়ার কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বও সামলেছেন৷

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৭:২২
বুধবার মমতার সঙ্গে ফেলেইরো।

বুধবার মমতার সঙ্গে ফেলেইরো। নিজস্ব চিত্র।

যেমনটা আগে থাকতে ভাবা গিয়েছিল, তেমনটাই হল। বুধবার গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরো যোগ দিলেন তৃণমূলে। যোগ দিয়ে তিনি বললেন, ‘‘বিজেপি-র বিরোধিতা করার জন্যই তৃণমূলে যোগ দিলাম। আর এতে আমি খুব খুশি।’’ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে জানিয়ে ফেলেইরো তাঁর ছেড়ে আসা দল সম্পর্কে বলেন, ‘‘কংগ্রেস নানা ভাগে বিভক্ত। টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে বিজেপিশাসিত গোয়ায় প্রশাসনিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে, গরিবি বাড়ছে।’’

প্রায় ৪০ বছর কংগ্রেসে ছিলেন ফেলেইরো। গোয়ায় দু’বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। একটা সময় গোয়ার কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বও সামলেছেন। ৭০ বছর বয়সি ফালেইরো গত সোমবারই বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ার পাশাপাশি কংগ্রেসও ছাড়েন। সেই সময় তিনি না বললেও পরে জানা যায়, তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন ফেলেইরো। বুধবার কলকাতার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে ফেলেরিও বলেন, "আমি ৪০ বছর ধরে কংগ্রেস করেছি। সেই সুবাদেই বলতে পারি বৃহত্তর ও কংগ্রেস পরিবারের সদস্য হিসেবেই মমতা বিজেপি-কে হারাতে পারবেন। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং তাদের যে হারানো যায়, তা তিনি করে দেখিয়েছেন।" ১০ জন কংগ্রেস নেতা তাঁর সঙ্গেই তৃণমূলে যোগদান করেন। ফেলেরিওর হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। যোগদান পর্বে ছিলেন সাংসদ সৌগত রায় ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

Advertisement
যোগদানের পরে সাংবাদিক বৈঠকে।

যোগদানের পরে সাংবাদিক বৈঠকে। নিজস্ব চিত্র

সৈকত রাজ্য থেকে কালীঘাটের দলে যোগ দিতে ফেলেইরো ছাড়াও কলকাতায় এসেছেন গোয়া কংগ্রেসের দুই প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক যতীশ নায়েক ও বিজয় পাই। এ ছাড়াও দুই প্রাক্তন সম্পাদক মারিও পিন্টো ও আনন্দ নায়েক। প্রসঙ্গত, মে মাসে বাংলায় তৃতীয়বার ক্ষমতা দখলের পর তৃণমূল জানিয়েছিল, এ বার লক্ষ্য হবে দেশের অন্যান্য জেলায় দলের শক্তিবৃদ্ধি। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা ও অসমের একাধিক কংগ্রেস নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। যার মধ্যে শিলচরের প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রয়াত কংগ্রেস নেতা সন্তোষমোহন দেবের কন্যাকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে তৃণমূল। এ বার গোয়ার কংগ্রেস সংগঠনে ভাঙন ধরাল তৃণমূল।

প্রসঙ্গত, এর আগে গোয়ায় দু'বার সংগঠন গড়ার প্রয়াস নিয়েছিল তৃণমূল। ২০১২ সালে গোয়া কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উইলফ্রেড ডি'সুজাকে যোগদান করানো হয়েছিল তৃণমূলে। ২০১২ সালের গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রতীক নিয়ে ভোটে লড়াই করেছিলেন তিনি ও তাঁর অনুগামীরা। সে যাত্রায় কোনও আসনেই জামানত বাঁচাতে পারেনি মমতার দল। দ্বিতীয় প্রয়াস ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে। লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন কংগ্রেসের আরও এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চার্চিল আলেমাও। তিনি ছিলেন চার্চিল ব্রাদার্স ফুটবল ক্লাবের কর্ণধার। সেবার লোকসভা ভোটে দক্ষিণ গোয়া আসন থেকে লড়াই করে জামানত হারিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী আলেমাও। এই নিয়ে গোয়ায় তৃণমূলের তৃতীয়বার ভোটের ময়দানে অবতীর্ণ হবে। এ বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে ফেলারিও বলেন, "আগের থেকে গোয়ার পরিস্থিতি অনেক পাল্টেছে। তাই আগে যা হয়েছে তা এ বার হবে না। ২০১৭ সালে ক্ষমতা দখলের কাছে পৌঁছে দিলেও কংগ্রেস নেতৃত্ব সরকার করতে পারেনি। এটা শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যর্থতা। কিন্তু এ বারের ভোটে তৃণমূল সেখানে সরকার গড়বে।"

আরও পড়ুন
Advertisement