Fraud MLA in Assembly

‘ভুয়ো বিধায়ক’ রহস্যের জট ছাড়াল পুলিশ, জানা গেল বিধানসভায় ঢুকে পড়া ব্যক্তির নাম, পরিচয়

বিধানসভা সূত্রে খবর, পরিচয় জানতে চাইলেন নিজেকে গজানন শর্মা বলেন ওই ব্যক্তি। দাবি করেন, তিনি বিধায়ক! এর পরেই নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে পুলিশ কিয়স্কে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৪৮
পুলিশ জানিয়েছে, আগন্তুকের নাম গজানন শর্মা (৬৩)।  নিজস্ব ছবি।

পুলিশ জানিয়েছে, আগন্তুকের নাম গজানন শর্মা (৬৩)। নিজস্ব ছবি।

বিধায়ক পরিচয় দিয়ে বিধানসভায় ঢুকে পড়া ব্যক্তি মানসিক ভাবে ভারসাম্যহীন। প্রাথমিক তদন্তের পর অন্তত তেমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, আগন্তুকের নাম গজানন শর্মা (৬৩)। প্রাথমিক খোঁজখবরের পর জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ি হাওড়া পুরনিগমের বেলিলিয়াস রোডে। সেখানে পুত্রবধূ ও নাতনির সঙ্গে থাকেন গজানন।

বুধবার দুপুরে বিধানসভায় যখন বাজেট বক্তৃতা করছিলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সেই সময় লবির কাছে এক ব্যক্তিকে ইতস্তত ভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। তাঁর পরনে খয়েরি রঙের ট্রাউজার্স ও সাদা ফুলহাতা শার্ট। উপরে চাপানো কালো ওভারকোট। মাথায় কাঁচাপাকা চুল। চোখে চশমা। হাতে প্লাস্টিকের প্যাকেট। তাঁকে দিশাহীন ভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখে সন্দেহ হয় নিরাপত্তারক্ষীদের। বিধানসভা সূত্রে খবর, পরিচয় জানতে চাইলে নিজেকে গজানন শর্মা বলেন ওই ব্যক্তি। দাবি করেন, ‘‘আমি বিধায়ক!’’ এর পরেই নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে পুলিশ কিয়স্কে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করেন। পরে তাঁকে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসংলগ্ন জবাব দিচ্ছিলেন আগন্তুক। কখনও নিজের নাম গজানন শর্মা বলছিলেন, কখনও আবার বলছিলেন গজানন বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তা-ই নয়, পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর সংবাদমাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনায়, ‘‘আমাকে আনন্দ বোস পাঠিয়েছেন। বিধানসভায় ঢোকার অনুমতি রয়েছে আমার। আমি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করুন।’’

পর ক্ষণেই তাঁর দাবি, মধ্য হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ রায়ের কথাতেই তিনি বিধানসভায় এসেছেন। এ সব থেকেই তদন্তকারীদের প্রাথমিক ভাবে অনুমান, গজানন মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেও পুলিশ জানতে পেরেছেন, গত দু’বছরে নিজের স্ত্রী ও পুত্রকে হারিয়ে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন গজানন। ২০২০ সালে তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়। পরের বছরেই মারা যান তাঁর স্ত্রী।

বিধানসভার গেট থেকে অধিবেশন কক্ষ পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অনেকগুলি স্তর রয়েছে। বাজেট পেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিনে বিধানসভায় যখন মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্য মন্ত্রীরা উপস্থিত, সেই সময় নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে গজানন কী ভাবে বিধানসভার লবির কাছে পৌঁছে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গজানন ভুল করে বিধানসভায় ঢুকেছিলেন, না কি তাঁর অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন
Advertisement