শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের ২৫৩টি বেসরকারি বিএড কলেজের অনুমোদন কেন ‘বাতিল’ হল, রাজ্য শিক্ষা দফতর তা তদন্ত করবে বলে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
কেন্দ্রীয় নিয়ম-নীতি না মানার জন্য বেসরকারি বিএড কলেজগুলির অনুমোদন পুনর্নবীকরণ করা হবে না বলে শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছে রাজ্যের বিএড বিশ্ববিদ্যালয়। অভিযোগ, রাজ্যের বিআর অম্বেডকর বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আগাম সতর্ক করা হলেও তা মানেনি বেসরকারি কলেজগুলির একাংশ। সে জন্যই আইন না মানা কলেজগুলির অনুমোদন বাতিল হয়েছে। শিক্ষক হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যে ডিগ্রি, তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এই সমস্ত কলেজে। রাজ্যে এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার সরকারি কলেজের সংখ্যা হাতে গোনা। মাত্র ২৪টি। তার তুলনায় বেসরকারি কলেজের সংখ্যা অনেক বেশি। প্রায় ৬০০টি বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ নেন লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রী। শুক্রবারের সিদ্ধান্তে এঁদের মধ্যে অনেকেরই ভবিষ্যৎ আপাতত অনিশ্চিত। তার প্রেক্ষিতে বিষয়টিতে শিক্ষা দফতরের তরফে তদন্ত করা হবে বলে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘কী হয়েছে, কেন হয়েছে জানি না। তবে আমি দফতর থেকে নিয়ম মেনে একটা তদন্ত করে দেখব।’’
প্রসঙ্গত, রাজ্যের এই ধরনের কলেজগুলির অনুমোদন দেয় বিএড বিশ্ববিদ্যালয়। তবে যে নিয়মের ভিত্তিতে অনুমোদন দেওয়া হয়, তা নির্ধারণ করে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ টিচার এডুকেশন (এনসিটিই)। সেই নিয়ম বলছে, এই কলেজগুলিতে ছাত্র এবং শিক্ষকের সংখ্যার একটি নির্দিষ্ট অনুপাত বজায় রাখতে হবে। বিএড বিশ্ববিদ্যালয় এ বছর শুরুতে সেই নিয়মের কথা স্মরণ করিয়েও দিয়েছিল কলেজগুলিকে।
প্রতি বছরই সরকারি অনুমোদন পুনর্নবীকরণের জন্য আবেদন করতে হয় এই বেসরকারি কলেজগুলিকে। এ বছর সেই আবেদনের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়, নিয়ম না মানলে সরকারি অনুমোদনের পুনর্নবীকরণ হবে না। ৪ অক্টোবর ছিল অনুমোদনের জন্য আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন। জমা পড়া আবেদন যাচাই করে দেখা যায়, বেসরকারি কলেজগুলির মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩০০টি কলেজ নিয়ম মেনেছে। নিয়ম মানা হয়েছে সরকারি বিএড কলেজগুলিতেও। বাকিরা মানেনি। এর পরেই এই বাকি ২৫৩টি কলেজের অনুমোদন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএড বিশ্ববিদ্যালয়।
তবে আপাতত এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অনুমোদন না পেলেও এনসিটিই নিয়ম মেনে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত যথাযথ ভাবে বজায় রেখে আবার আবেদন করলে তারা অনুমোদন পেতে পারে। তবে এই অনুমোদন যদি যথা সময়ে পাওয়া না যায়, তবে যে ছাত্রছাত্রীরা বছরের শেষ সেমেস্টার দিয়ে বেরোবেন, তারা সরকার অনুমোদিত কলেজের শংসাপত্র পাবেন কি না অনিশ্চয়তা দেখা গিয়েছে তা নিয়েও।