National Education Policy

জাতীয় শিক্ষানীতির প্রয়োগ কী ভাবে? খতিয়ে দেখতে কমিটি গড়ল রাজ্য, মাথায় যাদবপুরের উপাচার্য

চার সপ্তাহ পর এই বিশেষজ্ঞ কমিটি তাদের মতামত জানিয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতরকে রিপোর্ট পেশ করবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে রাজ্য।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৩ ১৬:০৪
Education department of West Bengal govt formed a committee to examine the possibilities of New Education Policy

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। ফাইল চিত্র।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আগেই জানিয়েছিলেন কমিটি গঠনের কথা। সেই মোতাবেক জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি)-র প্রয়োগ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার জন্য কমিটি গঠন করল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। ছয় সদস্যের এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে। এ ছাড়াও কমিটিতে রয়েছেন বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্মাল্য নারায়ণ চক্রবর্তী, রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান কৌশিকী দাশগুপ্ত এবং কাউন্সিলের যুগ্ম সম্পাদক (শিক্ষা) মৌমিতা ভট্টাচার্য। চার সপ্তাহ পর এই বিশেষজ্ঞ কমিটি তাদের মতামত জানিয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতরকে রিপোর্ট পেশ করবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে রাজ্য।

Advertisement

তিন বছরের পরিবর্তে জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে এ রাজ্যে স্নাতক পাঠক্রম কি চার বছরেরই হবে? আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই কি চালু হবে নতুন নিয়ম? এই সমস্ত প্রশ্ন এবং বিভ্রান্তি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। শনিবার শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘এই নিয়ে কোনও কথা বলব না। চার বছরের স্নাতক কোর্সের বিষয়ে উপাচার্যদের নিয়ে কমিটি গঠন করব। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কী ভাবে কার্যকর করা হতে পারে, তা নিয়ে সেই কমিটি মত দেবে। তার পর এই বিষয় নিয়ে বলতে পারি।’’

চার বছরের স্নাতক পাঠক্রম চালু করার ক্ষেত্রে আরও একটি সমস্যার কথাও তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। নতুন এই নিয়ম চালু করতে গেলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোরও দরকার। রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই পরিকাঠামো রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘‘এই নির্দেশিকা নিয়ে আমরা বলতে পারি, পরিকাঠামো তৈরির জন্য যে প্রচুর টাকা দরকার, সেই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নীরব রয়েছে। সেই টাকাপয়সার ক্ষেত্রে পরিষ্কার নির্দেশিকা চাই।’’ শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে চায় রাজ্য। চার বছরের স্নাতক পাঠক্রম আদৌ সেখানে চালু করা যায় কি না, তা-ও দেখতে চাইছে রাজ্য। বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে এক ধাপ এগোল রাজ্য। এমনটাই মনে করছেন এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

বিরোধিতা করলেও গত ১৭ মার্চ রাজ্য সরকার জাতীয় শিক্ষানীতির অনুসারী স্নাতক স্তরের ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর করতে রাজ্যের সাহায্যপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দেয়। শুক্রবার উচ্চশিক্ষা দফতরের সহ-সচিবের স্বাক্ষরিত এই নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রেজিস্ট্রারদের পাঠানো হয়। বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য ইউজিসি থেকে ৩১ জানুয়ারি সব রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তার পরেই রাজ্য ওই নির্দেশ দেয়। ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ অনুযায়ী, অনার্স কোর্সের মেয়াদ হবে চার বছর। চার বছরের স্নাতক স্তরেই পড়ুয়ারা গবেষণা করতে পারবেন। এই চার বছরের কোর্সের মাঝপথে ছেড়ে দিলেও আবার তা শুরু করার সুযোগ থাকবে। সারা ভারত সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক তরুণকান্তি নস্করের বক্তব্য, জাতীয় শিক্ষানীতিতে চার বছরের ডিগ্রি কোর্স এবং মাল্টিপল এগজ়িট ও এন্ট্রির যে কথা বলা হয়েছিল, তা রাজ্য সরকার কার্যকর করার মাধ্যমে ওই জনবিরোধী শিক্ষানীতি চালু করা শুরু করা হল। শিক্ষাবিদদের একাংশের মতে, এর ফলে ডিগ্রি পেতে গেলে এক বছর বেশি পড়তে হবে, তাতে ড্রপ আউট বাড়বে। তাই রাজ্যের বিজ্ঞপ্তির পর বিতর্ক আরও বেড়ে যায়। শনিবার সেই নিয়ে মত স্পষ্ট করে দেন ব্রাত্য। ঘটনাচক্রে সোমবার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে কোথাও জাতীয় শিক্ষানীতির কথা বলা হয়নি। তবে ‘নিউ কারিকুলাম এবং ক্রেডিট ফ্রেম ওয়ার্ক’ বিষয়টির উল্লেখ ছিল।

আরও পড়ুন
Advertisement