Leaps and Bounds

সিইও অভিষেক-সহ লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার ডিরেক্টরদের সম্পত্তির তথ্য হাই কোর্টে জমা দিল ইডি

১৪ সেপ্টেম্বর নিয়োগ মামলার শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিংহ ইডি-কে নির্দেশ দেন, লিপ‌্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার সিইও অভিষেক-সহ সকল ডিরেক্টরের সম্পত্তির পরিমাণ জানাতে হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:১৩
ED submitted report on property details of directors of leaps and Bounds, including CEO Abishek Banerjee

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার ডিরেক্টর এবং শীর্ষ পদাধিকারীদের সম্পত্তির তথ্য হলফনামা আকারে কলকাতা হাই কোর্টে জমা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। গত ১৪ সেপ্টেম্বর নিয়োগ মামলার শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিংহ ইডি-কে নির্দেশ দেন, লিপ‌্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার সিইও অভিষেক-সহ সকল ডিরেক্টরের সম্পত্তির পরিমাণ জানাতে হবে। সংস্থার সম্পত্তির খতিয়ানও ইডির কাছে চায় হাই কোর্ট। ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেন বিচারপতি।

Advertisement

অন্য দিকে, লিপ‌্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থায় ইডি অফিসারের ১৬টি ফাইল ডাউনলোডের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলে মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন বিচারপতি সিংহ। বৃহস্পতিবার নিয়োগ মামলার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী আদালতে এই বলে সওয়াল করেন যে, “কলকাতা পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়লে, তারা কি তদন্ত করে দেখবে না?” পুলিশ যে নিয়োগ সংক্রান্ত তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে চায় না, তা-ও জানান রাজ্যের আইনজীবী। তদন্ত করা যে পুলিশের কাজ, তা-ও বলেন রাজ্যের কৌঁসুলি। রাজ্যের বক্তব্য শুনে বিচারপতি সিংহ বলেন, “এই ঘটনায় আপনারা কি অতিসক্রিয়তা দেখাচ্ছেন না?” রাজ্যের বহু থানায় বহু অভিযোগ জমা পড়লেও, সেগুলি সক্রিয়তার সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হয় কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি।

রাজ্যের পাবলিক প্রসিকিউটর শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায়ের সওয়াল, মূল তদন্ত সিবিআই এবং ইডি করছে। সেখানে পুলিশ কোনও ভাবে ঢুকছে না। কিন্তু তদন্তের বাইরে নতুন কোনও অভিযোগ এলে তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব তো পুলিশের। একটি ডায়েরি হয়েছে তার ভিত্তিতেই পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করেছে। ইডির অফিসারদের কাছে ওই বিষয়ে ইমেল করে জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। ইডির রক্ষাকবচের আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর যুক্তি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধের অভিযোগ নেই। তাই আদালতের কাছে রক্ষাকবচ চাওয়ার কোনও অর্থ হয় না। অন্য দিকে, পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, ‘‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস কোম্পানির ফাইল সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে ইডি বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে হয়রানির কোনও অভিযোগ করা হয়নি। এই বেঞ্চে বিষয়টি ইচ্ছাকৃত ভাবে বিষয়টি তোলা হয়।’’

আদালতে ইডির আইনজীবীর বক্তব্য, তদন্তকারী সংস্থার প্রেস বিবৃতিতে অভিষেকের নামোল্লেখ থাকার কারণেই কলকাতা পুলিশের এই ‘অতিসক্রিয়তা’। অন্য বিচারপতির এজলাসে চলা এই সংক্রান্ত এই মামলায় ইডি জানায় যে, ১৬টি বিতর্কিত ফাইল তদন্তের অন্তর্ভুক্ত হবে না। তার পরেও কেন বিষয়টি নিয়ে অতিসক্রিয়তা দেখানো হচ্ছে, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রশ্ন তোলেন তদন্তকারী সংস্থাটির আইনজীবী। এই প্রসঙ্গে ‘ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়া’র উদাহরণ টানে ইডি। বিচারপতি তখন বলেন, “বাঘ কি বিড়াল জানি না, কিন্তু ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এখনই কোনও পদক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই।”

গত অগস্ট মাসে ইডি তাদের দফতরে তল্লাশি চালাতে এসে কম্পিউটারে ১৬টি ফাইল ডাউনলোড করে দিয়ে গিয়েছে। এই অভিযোগ লিখিত আকারে লালবাজারে জানান লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডসের কর্মী চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই ইডি লালবাজার এবং অভিষেকের সংস্থাকে চিঠি দিয়ে ফাইল ডাউনলোডের ব্যাখ্যা দিয়েছিল। লালবাজার থেকে পুলিশ গিয়ে লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডসের দু’টি কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে আসে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে জানিয়েছিল, ফাইলগুলি মামলার তদন্তে ব্যবহার করা হবে না। উল্লেখ্য যে, এই লিপ‌্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থাতেই আগে ডিরেক্টর ছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’।

আরও পড়ুন
Advertisement