গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণা। —ফাইল ছবি
গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী আমির খানের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করেছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আধিকারিকরা। কী ভাবে, কোন পথে মোবাইল গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে লোক ঠকাতেন আমির, তা শনিবারই জানিয়ে দিয়েছে ইডি। তারা জানিয়েছে, আমির যে মোবাইল গেমিং অ্যাপটি বানিয়েছিলেন, তার নাম ‘ই-নাগেটস’। এই অ্যাপের মাধ্যমেই সুকৌশলে প্রতারণা চালাতেন তিনি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ইডি জানিয়েছে, লোক ঠকানোর উদ্দেশ্যেই এই গেমিং অ্যাপটি বানিয়েছিলেন আমির। প্রাথমিক ভাবে মোবাইলে এই গেম যাঁরা খেলতেন, তাঁদের আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হত। লোভনীয় কমিশনও মিলত। তা দেখেই অ্যাপটির প্রতি সাধারণ মানুষের ঝোঁক বাড়ে বলে দাবি ইডি-র। এই গেম খেলার পর ওয়ালেটে যে পরিমাণ টাকা জমত, তা সহজেই বিনা বাধায় তুলে নিতে পারতেন গ্রাহকরা। ফলে খেলাটির প্রতি আরও বেশি করে আকৃষ্ট হতেন অনেকে।
প্রাথমিক ভাবে যাঁরা কম টাকা বিনিয়োগ করে কমিশন বাবদ বেশি টাকা এই অ্যাপের মাধ্যমে তুলে নিতে পারতেন, তাঁদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যেত। আমির খানের ‘টোপ’ গিলে ফেলতেন তাঁরা। এর পরই আরও বেশি কমিশনের আশায় মোটা টাকা বিনিয়োগ করতে শুরু করতেন তাঁরা। আর তাতেই অভিযুক্তের উদ্দেশ্য সফল হত। জনগণের কাছ থেকে মোটা টাকা পেয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ করেই ওই অ্যাপ থেকে টাকা তোলার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হত বলে জানিয়েছে ইডি। শুধু তা-ই নয়, অ্যাপ থেকে সমস্ত তথ্য, প্রোফাইলের খুঁটিনাটি মুছে দেওয়া হত সঙ্গে সঙ্গেই। তখন ব্যবহারকারী বুঝতে পারতেন তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। কিন্তু তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
তদন্ত চলাকালীন ইডি জানতে পেরেছে, লোক ঠকানোর জন্য অভিযুক্ত একাধিক নকল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতেন আমির। যে অ্যাকাউন্টগুলিও পরে অকেজো (ডিঅ্যাক্টিভেট) করে দেওয়া হত।
শনিবার সকাল সকাল শহরের ছ’টি জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। তার পরেই গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ীর বাড়ির খাটের তলা থেকে উদ্ধার হয় টাকার পাহাড়। বিকেল ৩টে পর্যন্ত গার্ডেনরিচে আমিরের বাড়ি থেকে অন্তত আট কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। একাধিক টাকা গোনার যন্ত্র আনিয়ে জোরকদমে টাকা গোনার কাজ চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।