শনিবার কাঁথিতে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। — নিজস্ব চিত্র।
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের হাতে তুলে দিতে হবে, রাজ্যের সঙ্গে সেই মর্মে নাকি কথোপকথন হয়েছে ইডির। এমনটাই দাবি করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তবে সেই দাবি পত্রপাঠ খারিজও হয়ে গিয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে এমন কোনও কথোপকথনের কথা স্বীকার করা হয়নি। বরং, কেন্দ্রীয় সংস্থার বক্তব্য, তারা শাহজাহানের বিষয়ে এমন কোনও দাবি করেননি।
কুণাল জানান, তিনি শুনেছেন, শাহজাহানকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইডির হাতে তুলে দিতে হবে বলে রাজ্যকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এ বিষয়ে ইডির সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের নাকি কথোপকথন হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, ‘‘আমি তো গোড়া থেকেই বলে আসছি, রাজ্য প্রশাসনকে না বলে বিভিন্ন এলাকায় সরাসরি ইডির ঢুকে পড়া একটা অস্বাভাবিক দৃশ্যপট। এলাকার পরিচিত, জনপ্রিয় কোনও মুখের বাড়িতে জোর করে দরজা ভেঙে ঢুকতে চাইলে উত্তেজনা তৈরি হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে। ওঁরা (পড়ুন ইডি) এখন যা করছেন, সেটা আগে করলেই ওঁদের কাজে রাজ্যের সহযোগিতা করতে সুবিধা হত।’’
কুণালের এই বক্তব্যের পরে ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে এই সংক্রান্ত কোনও কথোপকথন তাদের হয়নি।
শুক্রবার রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তের সূত্রে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে নজিরবিহীন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় ইডি অফিসারদের। অনেক ক্ষণ ডেকে শাহজাহনের সাড়া না পেয়ে বাড়ির দরজা ভাঙতে শুরু করে ইডি। তখনই স্থানীয়দের রোষের মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। জনতার মারে ইডির তিন আধিকারিক এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এক জনের মাথায় ছ’টি সেলাই পড়েছে। ইডি ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, তারা চুপ করে বসে থাকবে না। পদক্ষেপের প্রস্তুতি শুরু করেছে সিজিও কমপ্লেক্স। তবে শাহজাহানের দেখা মেলেনি শনিবারও।
সন্দেশখালিতে ইডির বিরুদ্ধে এই প্রতিরোধ রাজ্যের শাসকদলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। সন্দেশখালি থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে ‘সহযোগিতা’র পথে হাঁটা হবে? না কি এই ‘সন্দেশখালি মডেল’কেই ভবিষ্যতের পথ হিসাবে দেখবে তৃণমূল? চলছে জল্পনা। তার মাঝে কুণালের বক্তব্যে সহযোগিতার সুর শোনা গেল। তবে তিনি যে দাবি করেছেন, ইডির তরফে তা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।