কুন্তলের আইনজীবীর অভিযোগ ঘিরে শোরগোল। ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলতে ‘চাপ’ দিচ্ছেন তদন্তকারীরা, এই অভিযোগ তুলে আদালতের বিচারককে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন কুন্তল ঘোষ। এ বার নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত হুগলির প্রাক্তন এই যুবনেতার আইনজীবীও ইডি এবং সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক ‘গুরুতর’ অভিযোগ করলেন। তাঁর অভিযোগ, তদন্তকারী সংস্থাগুলি জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তাঁর মক্কেল কুন্তলের উপর ‘অত্যাচার’ করছে। কুন্তলকে দিয়ে বিভিন্ন নাম বলানোর জন্য কিছু প্রভাবশালী তদন্তকারীদের উপর ‘চাপ’ দিচ্ছেন বলেও দাবি করেন তিনি। তবে এই ‘প্রভাবশালী’ কারা, তা নির্দিষ্ট করে বলেননি কুন্তলের আইনজীবী।
বৃহস্পতিবার সকালে আলিপুর আদালত চত্বরে কুন্তল বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলার জন্য আমায় চাপ দেওয়া হচ্ছে। আদালতকে চিঠি দিয়ে সবটা জানিয়েছি।” অবশ্য কুন্তল আগেই দাবি করেছিলেন যে, ‘প্রভাবশালী’দের নাম বলার জন্য তাঁর উপর ‘চাপ’ দিচ্ছেন তদন্তকারীরা। তবে সেই সময় কোনও নাম উল্লেখ করেননি তিনি। বৃহস্পতিবার সরাসরি অভিষেকের নাম করেন। কুন্তলের আইনজীবী শেখ মেহদি নওয়াজের কথায়, “কুন্তল বিচারককে জেল পিটিশন দিয়েছেন। অবিচার হচ্ছে বুঝতে পারলে যে কোনও বন্দি সরাসরি বিচারককে চিঠি লিখে অভিযোগ জানাতে পারেন। কুন্তলও তা-ই করেছেন।”
তদন্তের অগ্রগতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কুন্তলের আইনজীবী। তাঁর কথায়, “এই মামলার দু’টি দিক। এক দিকে যাঁরা অবৈধ উপায়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য বাজার থেকে টাকা তুলেছেন। অন্য দিকে, যাঁদের কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কুন্তলরা যদি টাকা তুলে দিয়েই থাকবেন, তবে ওই টাকা কারা পেলেন, তা এখনও দেখাতে পারেননি তদন্তকারীরা।” এই অবস্থায় আদালত খুব বেশি দিন কুন্তলদের আটকে রাখতে পারে না বলেও মত দেন তিনি। বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে আদালত চত্বরে কুন্তল বলেন, “আগে যে বক্তব্য রেখেছিলাম, সেটাই লিখিত আকারে মহামান্য বিচারককে জানিয়েছি।’’ বৃহস্পতিবারই এই কাণ্ডে ধৃত তাপস মণ্ডলকে আদালত চত্বরে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘কোনও প্রভাবশালীর নাম প্রকাশ্যে আনবেন?’’ উত্তরে তাপস বলেন, “ওর কাছেই নতুন নাম শুনুন।” সংবাদমাধ্যমের তরফে এর পর প্রশ্ন করা হয়, “কার কথা বলছেন?” তাপস সংক্ষিপ্ত উত্তর দিয়ে বলেন, “কুন্তল, কুন্তল।” উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল এবং নীলাদ্রি ঘোষকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আলিপুর আদালতের বিচারক।