Hunger Strike of Junior Doctors

বাম আমলে আন্দোলন-অনশন করেছিলেন ডাক্তারি ছাত্র রমাপ্রসাদ, বাবার দেখানো পথেই অনশনে মেয়ে তনয়া

ধর্মতলার অনশন মঞ্চে সোমবার অসুস্থ হয়ে পড়ায় তনয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। একমাত্র মেয়ের শারীরিক অবস্থা নিয়ে তমলুক শহরের প্রবীণ নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ রমাপ্রসাদ উদ্বিগ্ন হলেও গর্বিত।

Advertisement
আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৫৯
বাবা ডাক্তার রমাপ্রসাদ পাঁজার সঙ্গে ডাক্তার তনয়া পাঁজা।

বাবা ডাক্তার রমাপ্রসাদ পাঁজার সঙ্গে ডাক্তার তনয়া পাঁজা। —নিজস্ব চিত্র।

সময় বদলেছে, বদলেছে সরকার। কিন্তু প্রতিবাদের পন্থা বদলায়নি বাবা এবং মেয়ের।

Advertisement

বাম আমলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে উন্নয়নের দাবিতে অনশন-আন্দোলন চালিয়েছিলেন সত্তরের দশকের ডাক্তারি ছাত্র রমাপ্রসাদ পাঁজা। সেই সময় জেলও খেটেছেন তিনি। এর কয়েক দশক পরে অধুনা তৃণমূল জমানায় গোটা রাজ্যে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার আমূল সংস্কারের দাবিতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে শামিল হয়ে অনশন শুরু করেছেন রমাপ্রসাদের মেয়ে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার তনয়া পাঁজা।

ধর্মতলার অনশন মঞ্চে সোমবার অসুস্থ হয়ে পড়ায় তনয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। একমাত্র মেয়ের শারীরিক অবস্থা নিয়ে তমলুক শহরের প্রবীণ নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ রমাপ্রসাদ উদ্বিগ্ন হলেও গর্বিত। কারণ, নিজের আদর্শ এবং নীতিবোধ, প্রতিবাদের মানসিকতা তিনি সঞ্চারিত করতে পেরেছেন সন্তানের মধ্যে। স্ত্রী মারা গিয়েছেন বছর পাঁচেক হল। বাবা ও মেয়েই পরস্পরের আশ্রয়। মঙ্গলবার অসুস্থ শরীরেই মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে মেয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন রমাপ্রসাদ।

এ দিন বিকেলে ফোনে রমাপ্রসাদ বলেন,‘‘মেয়ের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও পুরোপুরি বিপন্মুক্ত নয়। অল্প কথা হয়েছে।’’ প্রথম থেকেই জুনিয়র ডাক্তারদের লড়াইয়ে নৈতিক সমর্থন ছিল এই প্রবীণ চিকিৎসকের। নিজে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্না মঞ্চে দু’বার গিয়েছিলেন।

রমাপ্রসাদ জানালেন, ১৯৭৯ সালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময় কলেজে উন্নয়নের দাবিতে অনশন-আন্দোলন করে গ্রেফতার হয়েছিলেন। জেলও খেটেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এখন জুনিয়র ডাক্তাররা যে ১০ দফা দাবি পূরণে আন্দোলন করছেন, তার অন্যতম ‘থ্রেট কালচার’ বা হুমকি প্রথা বন্ধ করা। ওদের সব দাবির প্রতি আমার নৈতিক সমর্থন রয়েছে। আমার মেয়ে তনয়া আন্দোলনে রয়েছে। অনশনে বসার আগে ও আমাকে জানিয়েছিল। আমি সমর্থন করেছি।’’

তনয়ার বাড়ি তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে বামনআড়া গ্রামে। বাবার মতো তিনিও নাক-কান-গলা বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হওয়ার পথে এগোচ্ছেন। ওই বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট। গত ৯ অগস্ট আর জি করে চিকিৎসককে খুন-ধর্ষণের প্রতিবাদে শুরু হওয়া জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে শামিল হন তনয়া। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় ছিলেন। এর পর ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’-এর যে সব প্রতিনিধি অনশনে বসেন, তাঁদের অন্যতম ছিলেন তনয়া। টানা দশ দিন অনশনের পর তনয়ার শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হয়। তাঁকে সোমবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement