Durga Puja 2024

মণ্ডপসজ্জা ফিকে, কম বাজেটে ফাঁপরে শিল্পীরা

জেলা ছাড়িয়ে ভিন্ জেলা, কলকাতা থেকে প্রবাস— পূর্ব মেদিনীপুরের মণ্ডপ শিল্পীদের বাড়তি কদর রয়েছে। প্রতি বছরই ঢের কাজের বরাত আসে। সব সামলাতে জুলাই-অগস্ট থেকে কাজ শুরু করে দেন তাঁরা।

Advertisement
আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৮

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

পুজো এল বলে। মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরির কাজও চলছে। তবু সবেতেই এ বার ভাটা। আর জি কর আবহে বহু উদ্যোক্তা পুজোর বাজেটে কাটছাঁট করছেন। থিমের মণ্ডপ থেকে সরে এসে নিয়মরক্ষার পুজোয় ঝুঁকছেন। আর তাতেই মাথায় হাত মণ্ডপ শিল্পীদের।

Advertisement

জেলা ছাড়িয়ে ভিন্ জেলা, কলকাতা থেকে প্রবাস— পূর্ব মেদিনীপুরের মণ্ডপ শিল্পীদের বাড়তি কদর রয়েছে। প্রতি বছরই ঢের কাজের বরাত আসে। সব সামলাতে জুলাই-অগস্ট থেকে কাজ শুরু করে দেন তাঁরা। এ বারও অগস্ট থেকেই বিভিন্ন থিমের মণ্ডপসজ্জার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে তাল কেটেছে আর জি কর কাণ্ডে। হাসপাতালের মধ্যে তরুণী চিকিৎসক খুনের বিচার চেয়ে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদে শামিল নানা স্তরের মানুষ। নন্দীগ্রামের জেলাতেও দফায় দফায় নাগরিক প্রতিবাদ হয়েছে।

এই আবহে বহু জায়গাতেই এ বার দুর্গাপুজোর বাজেট কমানো হয়েছে। তাতে কোপ পড়ছে মণ্ডপসজ্জার খরচে। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত পূর্ব মেদিনীপুরের মণ্ডপশিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা এ বারও কলকাতার সুরুচি সঙ্ঘ, ত্রিধারা সম্মিলনী, এন্টালির চোদ্দোপল্লির সঙ্গে শিলিগুড়ি, ফালাকাটা, বর্ধমান, বারুইপুর, ঘাটাল, পাঁশকুড়া ও ঝাড়খণ্ডের রাঁচী মিলিয়ে মোট ১০টি মণ্ডপ তৈরির কাজ করছেন। মোট ৩০০ জন কারিগর এই কাজে যুক্ত। গৌরাঙ্গ মানছেন, “এ বছর দুর্গাপুজোর বাজার জমেনি। উৎসবের পরিবেশটাই নেই। আর জি করের ঘটনা জনমানসে ছাপ ফেলেছে। মনে হচ্ছে, মানুষ পুজোর জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত নয়।” গৌরাঙ্গ জানালেন, পুজোর উদ্যোক্তারাও সংশয়ে আছেন। অনেক পুজো কমিটি বাজেট অনুযায়ী আয়োজন করতে পারবে না বলে জানাচ্ছে। শিল্পীর কথায়, “আমরাও এ বার উদ্বিগ্ন। কারণ দুর্গাপুজোয় সেরা প্রাপ্তি তো দর্শকের প্রশংসা।”

তমলুক শহরের মণ্ডপশিল্পী অরূপ মাইতি এ বার এলাকায় দু’টি মণ্ডপসজ্জার কাজ করছেন। তিনিও বলেন, “আর জি কর কাণ্ডের জেরে এ বার দুর্গাপুজোর বাজেটে প্রভাব পড়েছে। উদ্যোক্তারা কম খরচে মণ্ডপসজ্জার কথা বলছেন। বাজেট কমিয়ে দিয়েছেন।” শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের মণ্ডপশিল্পী মানস দলপতি গত বছর জেলা ও জেলার বাইরে মিলিয়ে চারটি পুজোয় মণ্ডপ সাজিয়েছিলেন। এ বছর তা অর্ধেকে নেমেছে। তবে মানসের আশা, “কালীপুজোর সময়ে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”

জেলার এগরা মহকুমায় বড় বাজেটের পুজো হচ্ছে হাতে গোনা। বেশিরভাগ উদ্যোক্তাই বাজেট কমিয়েছেন। মণ্ডপও হচ্ছে সব সাদামাটা। ফলে, থিমের প্রতিযোগিতা কার্যত নেই। এগরার মণ্ডপশিল্পী নিতাই সাহু বলেন, “এ বছর বড় পুজোতেও থিম নেই। কম টাকায় মণ্ডপসজ্জায় আগ্রহী উদ্যোক্তারা। আমাদের তাই আয় কমেছে।”

প্রতিমার গয়নার চাহিদাও কমেছে। শিল্পী জয়দেব গিরির কথায়, “আগে প্রতিমার গয়না তৈরির প্রচুর বরাত পেতাম। এ বছর বাজার মন্দা। আমাদের কাজের বরাত কমেছে।”

সহ-প্রতিবেদন: গোপাল পাত্র

আরও পড়ুন
Advertisement