CPM West Bengal

বাংলায় ‘ইন্ডিয়া’ থাকছে না, পুজোর পর কথা শুরু হবে কংগ্রেস-নওশাদদের সঙ্গে, সাফ জানিয়ে দিলেন সেলিম

‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটির ১৪ নম্বর জায়গাটি সিপিএমের জন্য খালি রাখা হয়েছিল। কিন্তু দলের পলিটব্যুরো স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনও সাংগঠনিক কাঠামোয় তারা যাবে না।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৩৬
Md Salim CPM

সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। —ফাইল চিত্র।

পটনা, বেঙ্গালুরু, মুম্বই— বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরির উপস্থিতি বঙ্গ সিপিএমের নিচুতলায় বিস্তর ক্ষোভের সঞ্চার করেছিল। শনিবার রাজ্য সিপিএমের ফেসবুক পেজ থেকে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়ে দিলেন, ‘ইন্ডিয়া’ কোনও নির্বাচনী জোট নয়। সিপিএম মনে করে ‘ইন্ডিয়া’ একটি ‘ব্লক’। সেলিমের সাফ কথা, ‘‘ইন্ডিয়ার নামে ভোট হবে না বাংলায়।’’

Advertisement

রাজ্য সিপিএমের লাইন স্পষ্ট করে দিয়ে সেলিম পরিষ্কার বলেছেন, ‘‘বাংলায় তৃণমূল, বিজেপি উভয়ের বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই চলবে!’’

কয়েক দিন ধরেই সিপিএমের রাজ্য কমিটির সামাজিক মাধ্যম থেকে প্রচার করা হচ্ছিল, দলের কর্মী-সমর্থকদের যা যা প্রশ্ন রয়েছে, তা তাঁরা খোলামনে করতে পারেন। রাজ্য সম্পাদক সে সবের জবাব দেবেন। সেই অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘যুক্তি-তক্কো-গপ্পো’। শনিবার সে সব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে সেলিমের জবাবের প্রথম পর্বটি সম্প্রচারিত হয় সিপিএমের ফেসবুক পেজ থেকে। অভিনেতা দেবদূত ঘোষ সঞ্চালনা করেন অনুষ্ঠানটির। সেখানেই অনেকের জিজ্ঞাস্য একত্র করে সেলিমকে প্রশ্ন করা হয় কংগ্রেস, (নওশাদ সিদ্দিকিদের) আইএসএফের সঙ্গে ভোট বোঝাপড়া কি হবে? সেই সূত্রেই ওঠে ‘ইন্ডিয়া’ প্রসঙ্গ।

প্রশ্নের জবাবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘এখনও আসন সমঝোতা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। বামপন্থী দলগুলির মধ্যেও কোনও আলোচনা হয়নি। কংগ্রেস, আইএসএফ সকলের সঙ্গেই পুজোর পর আলোচনা শুরু হবে।’’ সেলিমের স্পষ্ট ইঙ্গিত— কংগ্রেস এবং আইএসএফকে নিয়েই তাঁরা লোকসভা ভোটে লড়তে চান। সেখানে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক তৃণমূলের কোনও স্থান নেই। বস্তুত, রাজ্যে রাজ্যে পাঁচতারা হোটেলে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক নিয়েও ক়টাক্ষ করেন সেলিম। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি-বিরোধী ব্লক ‘ইন্ডিয়া’য় এমন কিছু দল রয়েছে, যারা ফাইভ স্টার হোটেলে মিটিং করতে পছন্দ করে। কিন্তু রাস্তায় নামতে চায় না। আমরা বলছি, বিজেপির বিরুদ্ধে জনমত গড়তে হলে তা রাস্তায় নেমেই করতে হবে।’’

সেলিমের বক্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘সিপিএমের কাজই বিজেপির বি-টিমের ভূমিকা পালন করা। যখন বিজেপি ‘ইন্ডিয়া’কে ভয় পেতে শুরু করেছে, তখন সিপিএম তাদের দালালি করতে নেমে পড়েছে!’’

সিপিএমের এক কর্মী রাজ্য সম্পাদক সেলিমকে প্রশ্ন করেছিলেন, দার্জিলিং আসনের জন্য গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, হামরো পার্টির মতো দলগুলিকে কি বামেরা পাশে পেতে চাইবে। এ ক্ষেত্রেও সেলিম বলেন, তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে যারা রাস্তায় নেমে লড়াই করতে চাইবে, তাদেরই বামেরা পাশে পেতে চাইবে। তবে জাত-ধর্মের নামে কখনওই বামেরা ভোটের লড়াইয়ে যাবে না।

‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটির ১৪ নম্বর সদস্যের জায়গাটি সিপিএমের জন্য খালি রাখা হয়েছিল। কিন্তু দলের পলিটব্যুরো স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, কোনও সাংগঠনিক কাঠামোয় তারা যাবে না। আবার এ-ও বলেছে, লোকসভা ভোটে আসন সমঝোতা হবে রাজ্যের ‘বাস্তবতা’র ভিত্তিতে। কেন্দ্রীয় ভাবে তা সম্ভব নয়। রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে কংগ্রেস হাইকমান্ড কী অবস্থান নেবে, তা নিয়ে দোলাচলে রয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের একটা বড় অংশ। সিপিএম-ও তা নিয়ে সন্দিহান। শনিবারের ‘যুক্তি-তক্কো-গপ্পো’য় সেলিম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী থেকে আইএসএফের একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি— সকলকেই বার্তা দিতে চাইলেন বলে মনে করছেন অনেকে।

আরও পড়ুন
Advertisement