তন্ময় ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।
দলের সদস্যপদ থেকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করার সিদ্ধান্ত আপাতত প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু দলের নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে এক মহিলা সাংবাদিকের তোলা ‘হেনস্থা’র অভিযোগের প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী হবে, সেই প্রশ্নে সতর্ক হয়ে এগোতে চাইছে সিপিএম। দলীয় সূত্রের খবর, সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব এই বিষয়ে আইনজীবী এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরও পরামর্শ নিচ্ছেন।
মহিলা সাংবাদিক তাঁর অভিযোগের কথা প্রকাশ্যে আনার দিনেই পত্রপাঠ তন্ময়কে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিপিএম। তার পরে দলের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি (আইসিসি) সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক, তন্ময় এবং আরও কয়েক জনের বক্তব্য শুনে তদন্তের কাজ শেষ করেছে। আইসিসি-র রিপোর্ট জমা পড়ার পরেই প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময়ের সাসপেনশন তুলে নেওয়ার জন্য উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম নেতৃত্বের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের তরফে। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তদন্ত চলাকালীন নিলম্বিত করা হয়েছিল তন্ময়কে, তদন্ত শেষ হতে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর পরে আইসিসি-র রিপোর্ট অনুযায়ী দল সিদ্ধান্ত নেবে। এখন প্রশ্ন, সেই সিদ্ধান্ত কী হবে?
সিপিএমের একাংশের মতে, সাসপেনশন তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে অনাবশ্যক ‘তাড়াহুড়ো’ করা হয়েছে। এর পরে আইসিসি-র রিপোর্টের ভিত্তিতে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করলেই প্রশ্ন উঠবে, এক বার সাসপেনশন তুলে আবার শাস্তি দেওয়ার কী মানে! সূত্রের খবর, প্রাক্তন বিধায়কের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগের পক্ষে কোনও তথ্য-প্রমাণ না-মিললেও তাঁর আচরণে কিছু অসঙ্গতি পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এমতাবস্থায় গোটা বিষয়টি দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কলকাতায় থাকাকালীন দলের পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাটের পরামর্শও নিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘সংশ্লিষ্ট সব দিক বিবেচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ ডিসেম্বরের শেষে রাজ্য কমিটি এবং জানুয়ারিতে কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেও সেই সিদ্ধান্ত পেশ হওয়ার কথা।
সাসপেনশন-মুক্ত হয়ে তন্ময় ইতিমধ্যে দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। আদালত থেকে আগাম জামিনও নিয়েছেন। তাঁরও মতে, দলের নিয়ম ও প্রক্রিয়া মেনে চলার কথাই বলেছেন রাজ্য নেতৃত্ব।