Bangladesh Unrest

বাংলাদেশ নিয়ে ব্যথিত কবি নজরুলের চুরুলিয়া

ধবার নিজের বাড়িতে প্রায় বধির হয়ে বসেছিলেন কবির ভ্রাতুষ্পুত্র রেজাউল করিম। তিনি এই মুহূর্তে চুরুলিয়া নজরুল অ্যাকাডেমির সম্পাদক।

Advertisement
সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:৫৭
কাজী নজরুল ইসলাম।

কাজী নজরুল ইসলাম। ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দুঃখিত সে দেশের জাতীয় কবি নজরুলের জন্মভিটে চুরুলিয়া গ্রাম। ব্যথিত কবির পরিবারও। প্রতিবেশী রাষ্ট্রে যত দ্রুত সম্ভব স্থিতবস্থা ফিরুক তাঁরা সকলেই চান। পরিবারের সদস্যদের আক্ষেপ, এমন অবস্থা চলতে থাকলে তাঁরা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যাওয়াই বন্ধ করে দেবেন।

Advertisement

কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম চুরুলিয়াতে হলেও তাঁর মৃত্যু হয় বাংলাদেশে। সেখানেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। আজও চুরুলিয়ায় বসবাসকারী কবির পরিবারের সদস্যরা নিয়মিত সেখানে গিয়ে কবিকে শ্রদ্ধা জানান। কবির পরিবারের কেউ কেউ বাংলাদেশে বসবাস করেন। দুই বাংলায় থাকা কবির আত্মীয়-পরিজন নিয়মিত যাতায়াত করেন। কিন্তু, বর্তমান অচলাবস্থায় উদ্বিগ্ন দুই দেশে থাকা কবির পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা সকলেই চাইছেন, সমস্ত বিভেদ ভুলে স্থিতবস্থা ফিরে আসুক। আবার স্বাভাবিক হোক দুই দেশের সম্পর্ক।

বুধবার নিজের বাড়িতে প্রায় বধির হয়ে বসেছিলেন কবির ভ্রাতুষ্পুত্র রেজাউল করিম। তিনি এই মুহূর্তে চুরুলিয়া নজরুল অ্যাকাডেমির সম্পাদক। বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রেজাউল বলেন, ‘‘নজরুল ছিলেন মানব দরদি কবি। অথচ, তিনি যে দেশের জাতীয় কবি সেই দেশেই আজ মানবতা খুন হচ্ছে।’’ রেজাউলের দাবি, আজকের দিনে কবি জীবিত থাকলে নিজেই হয়তো বাংলাদেশ ছেড়ে, সে দেশের জাতীয় কবির সম্মান বিসর্জন দিয়ে নিজের জন্মভিটেয় ফিরে আসতেন। তাঁর আক্ষেপ, কবিকে মাধ্যম করে দুই বাংলায় সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন তৈরি হয়েছিল। অদ্ভুত এক সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে উঠেছিল। রেজাউল বলেন, ‘‘এখন যা পরিস্থিতি তাতে ওদেশে যাওয়া আর স্বাচ্ছন্দ বোধ করছি না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আর কখনও সেখানে যাব না।’’

শুধু কবির পরিবার নয়। দুঃখিত চুরুলিয়ার বাসিন্দারাও। চুরুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর মজুমদার বলেন, ‘‘বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের দেশের সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু, যে দেশের জাতীয় কবি হন নজরুলের মতো একজন মানব দরদি, সেখানে প্রতিদিন ধ্বংস হচ্ছে মানবতা।’’ তিনি মনে করেন নজরুল সাম্যের কবি। অথচ, বাংলাদেশের একাংশ নাগরিক সেখানে অসাম্য তৈরি করেছেন।

তাঁরা সকলেই চাইছেন খুব দ্রুত বাংলাদেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসুক। আবার দুই বাংলার মানুষের সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে উঠুক।

Advertisement
আরও পড়ুন