প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। —ফাইল ছবি।
তিনি অসুস্থ। তিনি বিগত ছ’বছর ধরে গৃহবন্দি। সেই অসুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ছবি নিয়ে কি গত চার বছর চার মাসের ব্যবধানে ভিন্ন অবস্থান নিল তাঁর দল সিপিএম? শনিবার রাত থেকে সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। অসুস্থ বুদ্ধদেবের ছবি প্রকাশ্যে আনা নিয়ে ২০১৯ সালে তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। কিন্তু রবিবার বাম যুবদের ব্রিগেড সমাবেশের প্রাক্কালে সেই অসুস্থ বুদ্ধদেবের বিছানায় শোয়া ছবি অবলীলায় সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলেন সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের একটি অংশ। যদিও দল বা যুব সংগঠনের কোনও অফিশিয়াল পেজ থেকে ওই ছবি পোস্ট করা হয়নি।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সস্ত্রীক ধনখড় গিয়েছিলেন বুদ্ধদেবকে দেখতে। তার পর ছবি পোস্ট করেছিলেন সামাজমাধ্যমে। সেই ছবিতে দেখা গিয়েছিল, বুদ্ধদেব বসে রয়েছেন বিছানায়। নাকে লাগানো অক্সিজেনের নল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে রয়েছেন তৎকালীন রাজ্যপাল। ধনখড়ের কিছুটা পিছনে দাঁড়িয়ে ধনখড়ের স্ত্রী এবং বুদ্ধদেব-জায়া মীরা ভট্টাচার্য।
রবিবার ব্রিগেড সমাবেশের জন্য সংগঠনের প্রাক্তনী হিসেবে বুদ্ধদেবের বার্তা আনতে গিয়েছিলেন মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়রা। শনিবার রাত থেকে সিপিএমের একাংশের কর্মী সামাজমাধ্যমে ছবি পোস্ট করেন। তাতে দেখা যায়, বিছানায় এক কাত হয়ে শুয়ে রয়েছেন বুদ্ধদেব। নাকে লাগানো অক্সিজেনের নল। তাঁর হাত ধরে রয়েছেন মিনাক্ষী।
চার বছর আগে ধনখড়ের পোস্ট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সিপিএম নেতৃত্ব বলেছিলেন, ‘‘অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ছবি সমাজমাধ্যমে দেওয়া রুচিহীনতার কাজ। তিনি ওই পোস্ট মুছে দিন।’’ তবে এ বারের ছবি নিয়ে আপত্তি জানাননি সিপিএম নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাশ বলেন, ‘‘দুটো প্রেক্ষাপটকে এক করলে হবে না। সেই সময়ে এক জন অসুস্থ মানুষকে দেখতে গিয়ে তাঁর ছবি দিয়েছিলেন ধনখড়। এ বার প্রাক্তনীর বার্তা আনতে গিয়েছিলেন বর্তমান যুব নেতৃত্ব।’’
রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশে বুদ্ধদেবের বার্তা পাঠ করা হবে। শনিবার রাতে বুদ্ধদেবের বাড়ি থেকে বেরিয়ে মিনাক্ষী বলেছিলেন, ‘‘উনি চিরকাল আমাদের কাছে শক্তি এবং আবেগ। উনি আমাদের হাত ধরে বলেছেন, রবিবার বড় ব্রিগেড হবে। ভাল ব্রিগেড হবে।’’ তবে অসুস্থ বুদ্ধদেবের ছবি ছড়িয়ে দেওয়া নিয়ে সিপিএমের মধ্যেও নানাবিধ আলোচনা শুরু হয়েছে।