R G Kar Hospital Incident

সিবিআই-কে এ বার ‘হুঁশিয়ারি’ দিতে পথে মান্নান-প্রদীপেরা

‘সেটিং ছেড়ে বিচার দাও, নইলে সিবিআই ফিরে যাও’— এই স্লোগান সামনে রেখে নিজ়াম প্যালেস অভিযানের ডাক দিয়েছিল তারাই।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৪
নিজ়াম প্যালেসে সিবিআই দফতরের সামনে বিক্ষোভে কংগ্রেস নেতা সন্তোষ পাঠক, আব্দুল মান্নান, অমিতাভ চক্রবর্তী।

নিজ়াম প্যালেসে সিবিআই দফতরের সামনে বিক্ষোভে কংগ্রেস নেতা সন্তোষ পাঠক, আব্দুল মান্নান, অমিতাভ চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যে সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক ঘটনায় তদন্তের ভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। কিন্তু তদন্তের ফল মেলেনি! আর জি কর-কাণ্ডের পরিণতিও যাতে সেই রকম না হয়, সেই দাবি নিয়ে কলকাতায় সিবিআই দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের দাবি, আর জি কর-কাণ্ডে ‘বিচার’ পেতে গেলে দ্রুত ও প্রভাবমুক্ত তদন্ত জরুরি।

Advertisement

আর জি করের ঘটনার পরে কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতে ‘লালবাজার অভিযান’ হয়েছিল বড়বাজার জেলা কংগ্রেসের ডাকে। এ বার ‘সেটিং ছেড়ে বিচার দাও, নইলে সিবিআই ফিরে যাও’— এই স্লোগান সামনে রেখে নিজ়াম প্যালেস অভিযানের ডাক দিয়েছিল তারাই। সুপ্রিম কোর্টে আজ, বৃহস্পতিবার আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে মামলার শুনানি (পরে যা স্থগিত হয়েছে) নির্ধারিত ছিল বলেই বুধবার এই কর্মসূচি বেছে নেওয়া হয়েছিল। অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে জমায়েত করে মিছিল নিয়ে এ দিন নিজ়াম প্যালেসে এসেছিলেন কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। পথে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। নিজ়াম প্যালেসের মূল ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বিক্ষোভ আটকানোর জন্য। রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ করেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। বর্ষীয়ান নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নানদের পাশাপাশি ছিলেন অমিতাভ চক্রবর্তী, সন্তোষ পাঠক, রোহন মিত্র, তুলসী মুখোপাধ্যায়, মিতা চক্রবর্তী, ইন্দ্রাণী দত্ত চট্টোপাধ্যায়, সিদ্ধার্থ সরকার, আনিসুর রহমান, সৌভিক মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজে’র নামে আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে নবান্ন অভিযানে প্রথমে সমর্থন জানিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিজেপি ছিল ওই কর্মসূচির পিছনে। বিজেপির বকলমে কোনও আন্দোলনে তারা থাকবে না বলে সিপিএম স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়ার পরে প্রদেশ কংগ্রেসও ‘দূরত্ব’ রেখেছিল। এ বার প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, আদালতের নির্দেশে তদন্ত চলাকালীন এখন সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কোনও আন্দোলনকে তাঁরা সমর্থন করছেন না। তবে সেই ‘ফতোয়া’ উড়িয়ে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই এ দিন বহু কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক বিক্ষোভে জড়ো হয়েছিলেন। পুর-প্রতিনিধি সন্তোষ বলেছেন, ‘‘এত অভিযোগ এবং হইচই সত্ত্বেও সারদা, নারদ-কাণ্ডে সিবিআই মাথাদের ধরেনি। গরু পাচার, কয়লা পাচার বা বগটুই-কাণ্ড ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। মোদী-দিদির ‘সেটিং’ রয়েছে বলেই এমন হচ্ছে। আমরা সেই ‘সেটিং’-এর প্রতিবাদ জানাতে এসেছি।’’ অমিতাভের বক্তব্য, ‘‘আর জি করের ঘটনায় নির্যাতিতা বিচার না-পেলে বাংলার মানুষ যে ছেড়ে কথা বলবে না, আমরা সেই কথা বলতে এসেছি।’’ প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপের মতে, ‘‘সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে নয়, বরং তারা যেন গর্তে ঢুকে ‘র‌্যাট মাইনার্স’দের মতো সব অপরাধীকে বার করে আনে, সেটাই আমাদের দাবি।’’

পক্ষান্তরে, কার্যত প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্রের সুরেই বিজেপির আইনজীবী, যুব নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারির প্রশ্ন, ‘‘আদালতের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে। সেই সময়ে কংগ্রেস নেতারা সিবিআই দফতরে জবাব চাইতে গিয়েছেন কেন? অন্য কোনও উদ্দেশ্য আছে?’’

আরও পড়ুন
Advertisement