দুবাই বন্দর —সংগৃহীত।
স্পেনের পর সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। বার্সেলোনা থেকে দুবাই। বৃহস্পতিবার ভোরে আমিরশাহির বাণিজ্য-রাজধানীতে এসে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার চলতি সফরের তৃতীয় শিল্পবৈঠকটি দুবাইতে করতে চলেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার কোনও সরকারি কর্মসূচি ছিল না মমতার। তবে তাঁর প্রতিনিধিদল পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ীই দুবাই বন্দর পরিদর্শনে গেলেন এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের প্রধান সচিব বন্দনা যাদব দুবাই বন্দরে যান। ছিলেন দুবাইয়ে ভারতীয় উপদূতাবাসের প্রতিনিধি এবং ভারতীয় বণিকসভা ‘ফিকি’ (ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি)-র কর্তারাও। তাঁরা প্রথমে বিশ্বের প্রথম সারির এই বাণিজ্যবন্দরের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন। তার পর বৈঠক করেন বন্দরের কর্তা আহমেদ আল মাজ়রোউই, ইবতেসাম আল কবি, কেভিন ডি’সুজার সঙ্গে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৈঠকে বন্দর এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ের নানা নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। বাংলায় একটি শিল্পতালুক করার বিষয়েও কথা হয়েছে বৈঠকে। চলতি বছরের নভেম্বরে হতে চলা বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মলনে রাজ্যের তরফে দুবাই বন্দরের কর্তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
দুবাই বন্দরের দু’টি মূল জায়গা ‘জাফজ়া মুক্তাঞ্চল’ এবং ‘জেবেল আলি বন্দর’। জাফজ়া বড় মাপের মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল। একই সঙ্গে এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে সরাসরি বাণিজ্যিক যোগাযোগের কেন্দ্র। জেবেল আলি বন্দর গভীর সমুদ্র বন্দর। বাংলার তাজপুরে এমন বন্দর করার ব্যাপারে দৌত্য চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। সেই কারণেই দুবাই বন্দরে গিয়ে সেখানকার পরিকাঠামো সরেজমিনে দেখেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি দল।
শুক্রবার জোড়া কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। একটি শিল্পবৈঠক। এবং অন্যটি প্রবাসী বাঙালি তথা ভারতীয়দের সঙ্গে আলাপচারিতা। এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার ব্যাপারে উৎসাহ প্রকাশ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির গুরুত্বপূর্ণ শিল্পগোষ্ঠী লুলু (LuLu)। শুক্রবার সেই বৈঠক হওয়ার কথা। লুলুর সঙ্গে ভারতের যোগ রয়েছে। তাদের কর্ণধার ইউসুফ আলি মুসালিয়াম ভেট্টিল আবদুল কাদেরের শিকড় কেরলের ত্রিশূরে। তাঁর জন্ম, পড়াশোনা সবই দক্ষিণের রাজ্যটিতে। পরে তিনি দুবাই চলে যান। কাকার গড়ে তোলা ব্যবসাকেই বড় করেন তিনি।
মাদ্রিদ ও বার্সেলোনাতেও বাণিজ্য বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে ইতিবাচক সাড়াও পেয়েছে রাজ্য সরকার। বার্সেলোনার প্রবাসীদের সঙ্গে অনুষ্ঠানে এক ব্যক্তি কলকাতার আশপাশে যন্ত্রাংশের কারখানা তৈরির বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। মিত্তল গোষ্ঠী স্পেনে রেলের স্লিপার তৈরি করে। সেই কারখানা পরিদর্শনে গিয়েছিল রাজ্যের প্রতিনিধি দল। মিত্তল গোষ্ঠী রাজ্যে ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। স্পেনের মতো দুবাইয়ের বাণিজ্য সম্মেলন থেকেও রাজ্যের লক্ষ্মীলাভের আশা করছে সরকার।