প্রধানমন্ত্রীকে আবার চিঠি লিখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত।
ধর্ষণের বিরুদ্ধে কড়া আইন চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আবার চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে। আট দিনের ব্যবধানে। শুক্রবার মোদীকে লেখা সেই দু’পাতার চিঠিটি সমাজমাধ্যমেও পোস্ট করেছেন মমতা।
গত ২২ অগস্ট ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন বলবৎ করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে প্রথম চিঠিটি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবারের চিঠির গোড়াতেই সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে মমতা লিখেছেন, ‘‘অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়ে লেখা সেই চিঠির কোনও জবাব এখনও পর্যন্ত আসেনি।’’ তবে মোদীকে লেখা ওই চিঠির যে প্রতিলিপি কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছিল, তার জবাব এসেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু ধর্ষণের মতো অপরাধ রুখতে সংসদে বিল পাশ করিয়ে দোষীর ‘কঠোরতর এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’র প্রয়োজনীয়তার কথা প্রথম চিঠিতে তিনি লিখলেও নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের তরফে পাঠানো জবাবি চিঠিতে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনও উত্তর মেলেনি বলে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি যে গুরুত্ব দিয়ে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক, সমাজ সম্পর্কিত বিষয়টি নিয়ে ভেবেছিলাম, গতানুগতিক জবাবি চিঠিতে সেই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।’’
প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো প্রথম চিঠিতে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের মাধ্যমে ১৫ দিনের মধ্যে যাতে ধর্ষণের মামলায় দোষীর বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে শাস্তি নিশ্চিত করা যায়, সেই বিষয়ে সওয়াল করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পাশাপাশি, ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের বিচার পরিকাঠামো (বিশেষ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট, পকসো মামলার জন্য পৃথক আদালত গঠন প্রভৃতি) নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রথম চিঠিতে যে বিষয়গুলি জানানো হয়েছিল, নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের প্রত্যুত্তরে সে প্রসঙ্গের কোনও উল্লেখ নেই বলে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা দ্বিতীয় চিঠিতে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অগস্ট সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি শুনছে। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ঘটনার পরম্পরার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এই আবহে ধর্ষণ রুখতে কড়া আইন আনার জন্য ক্রমশ সুর চড়াচ্ছেন মমতা।